সিংড়ায় পূর্ব বিরোধে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৮, আটক ৫

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২২; সময়: ৯:০২ অপরাহ্ণ |
সিংড়ায় পূর্ব বিরোধে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৮, আটক ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর : নাটোরের সিংড়ায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৮ জন আহত হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার ছাতারদিঘী ইউনিয়নের কুমিড়া গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য সোহেল রানা ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিমের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতদের ৩ জনকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৫ জনকে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বর্তমান ইউপি সদস্য সোহেল রানা ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম সহ দু’পক্ষের ৫জন কে আটক করে। আটক অন্যরা হল কুমিড়া গ্রামের মৃত তছলিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুল আলীম, আকবর আলীর ছেলে জান্টু, নুরুল ইসলামের ছেলে বাদশা।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কুমিড়া গ্রামের খাস পুকুর নিয়ে শিক্ষক শাহীন আলী ও তার ভাই বর্তমান ইউপি সদস্য সোহেল রানার সাথে সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিমের বিরোধ চলে আসছিল। পরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে কুমিড়া গ্রামের এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে শিক্ষক শাহীন আলীকে স্থানীয় জনতা পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় এবং ২০ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষকের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করে আদালত। এর পরে গ্রামের একটি পক্ষ শাহীন মাষ্টারের উপযুক্ত বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে।

অপরদিকে শাহীন মাষ্টারকে নির্দোষ দাবি করে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে গ্রামের অপর একটি অংশ। এদিকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে গ্রামে আসেন শিক্ষক শাহীন আলী। তারপর থেকেই কুমিড়া গ্রাম ও স্থানীয় একডালা বাজারে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। শনিবার সকাল ৭টায় একডালা বাজারে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এর জের ধরে কিছুক্ষণ পর বর্তমান ইউপি সদস্য সোহেল রানার নেতৃত্বে কুমিড়া গ্রামের কৃষক জাহেদুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালানো হলে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে কালিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ ও সিংড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহতরা হল জাহেদুল ইসলাম (৫৫), রমজান আলী (৫০), তোফা (৫২), আলা উদ্দিন (৩৫), আনিছুর রহমান (৪০), রফিক (৪২), রিপন (২৬) ও সেন্টু (৩১)।

এবিষয়ে ছাতারদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বাদশা বলেন, শিক্ষক শাহীন আলী জামিনে ছাড়া পাওয়ায় এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।

সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, পূর্ব বিরোধে দু’পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে আর এখন পর্যন্ত ৫জনকে আটক করে হাজতে রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টায় উপজেলার কুমিড়া গ্রামের এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে পাকিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও কুমিড়া গ্রাম সভাপতি শাহীন আলী কে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। এর পরে ওই শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার ও মুক্তির দাবিতে আলাদা ভাবে দু’পক্ষ মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে