নিয়ামতপুরে মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২২; সময়: ৩:২৫ অপরাহ্ণ |
নিয়ামতপুরে মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : ”মাগো তুমি আসবে বলে, হৃদয় জুড়ে খুশির লহর , ও মা তোমার পথ চেয়ে, আমি শুধুই গুনি প্রহর ”। ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবে। এর আগে সায়ংকালে দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিয়ামতপুর উপজেলার প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপে ব্যানার এমনকি কার্ড দিয়ে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এছাড়া শুভেচ্ছো জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ, উপজেলা আ্ওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান বিপ্লব।

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরো সুসংহত হোক- এ কামনা করে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেন, ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজা দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শারদীয় দুর্গোৎসব সত্য-সুন্দরের আলোকে ভাস্বর হয়ে উঠুক।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ বলেন, দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসব। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যহু বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ-কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন- বাধাবিঘ্ন, ভয় দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্য ক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।

হিন্দু পূরাণ মতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল। কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরৎকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন রোববার মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ৩০মিনিটে। সোমবার মহাঅস্টমীর পূজা আনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে বিকাল ৪টা ৪৪ মিনিটে এবং সমাপনী বিকাল ৫টা ৩২ মিনিটের মধ্যে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পুস্পাঞ্জলি সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে।

পরদিন বুধবার সকাল ৬ টা ৩০ মিনিটে দশমী পূজা আরম্ভ, পুস্পাঞ্জলি সকাল ৮টায় এবং পূজা সমাপনী ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের মধ্যে। সন্ধ্যা আরাত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার সভাপতি বাবু ঈশ্বর চন্দ্র বর্মন বলেন, নিয়ামতপুর উপজেলায় এ বছর ৬৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন হবে। গত বছর নিয়ামতপুর উপজেলায় দুর্গাপূজার সংখ্যা ছিল ৬১টি। এবার এ সংখ্যা ০২টি বেড়েছে। উপজেলায় বাহাদুরপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশী। বাহাদুরপুর ইউনিয়নে এ বছর ১৯টি মন্ডপে পূজা হবে।

এদিকে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিয়ামতপুর উপজেলার প্রতিটি পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসারসহ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও আনসারের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবেন।

নিয়ামতপুর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জন বিজয়পুরী বলেন, বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শনিবার থেকে শুরু হয়েছে, যা আগামী ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।

দূর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নিয়ামতপুর উপজেলা সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিককে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে