ইরানে সহিংস বিক্ষোভ অব্যাহত, ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দেশে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২; সময়: ১২:২৩ অপরাহ্ণ |
ইরানে সহিংস বিক্ষোভ অব্যাহত, ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দেশে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনীর মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানে সহিংস বিক্ষোভ চলছেই। দমনের চেষ্টা করছে সরকার। এ পর্যন্ত আটক করা হয়েছে অন্তত ১ হাজার ২০০ জনকে। সহিংস বিক্ষোভে এরই মধ্যে ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির ৩১টি প্রদেশে। ইরান ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা।

পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুতে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ কঠোর হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। চলমান বিক্ষোভে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। নিহত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এ কথা বলেন রাইসি। এমনকি দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা যারা আমলে নিচ্ছে না, তাদের পরিকল্পিতভাবে মোকাবিলার কথাও জানান তিনি।

এদিকে বিক্ষোভকারীদের দমাতে কাঁদানে গ্যাস, বেয়নেট, জলকামান ও গুলির মতো প্রচলিত অস্ত্রের পাশাপাশি অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এই বিক্ষোভ বেশ কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় জনগণ। মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের ৩০টির বেশি প্রদেশের পাশাপাশি বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ বিক্ষোভ। এতে আটক করা হয়েছে সহস্রাধিক আন্দোলনকারীকে।

ইরানের বিক্ষোভের এ আগুন ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। রাস্তায় নেমে নিজের চুল কাটার পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এ ঘটনার।

এ ছাড়া ইরানের এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে লন্ডনেও। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) শহরের রাস্তায় বিক্ষোভে নামেন কয়েকশ‘ বিক্ষোভকারী। পরে লন্ডনে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তারা। বিক্ষোভ ঠেকাতে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে নিরাপত্তা বাহিনী। একপর্যায়ে দুই পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা। এদিন অন্তত ১২ বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।

একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমি এখানে এসে চুল কাটছি। কারণ, ইরানে হিজাবের কারণে আজ না হয় কাল আমাদের অনেক বোন মরতে যাচ্ছে। আমি এটা চাই না। আমি এটি ঘৃণা করি। এখানে এসে আমি তাদের সমর্থন জানাতে চাই–যাদের প্রতিবাদের কোনো ভাষা নেই।’

গত সপ্তাহে ঠিকমতো হিজাব না পরার অভিযোগে মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে ইরানের পুলিশ। পরে তাদের হেফাজতেই মৃত্যু হয় তার। তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে–এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তবে ইরানি কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্রেপ্তার হওয়ার পর মাহসা আমিনি ‘হৃদ্‌রোগে’ আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে যান এবং পরে তার মৃত্যু হয়। তার পরিবারের দাবি, মাহসা আমিনির হৃদ্‌রোগ ছিল না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে