ইডেন ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত, ১৬ জনকে বহিষ্কার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২; সময়: ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ |
ইডেন ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত, ১৬ জনকে বহিষ্কার

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই কমিটির ১৬ জনকে বহিষ্কার করা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সোমবার দিবাগত রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।’

‘শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে, প্রাথমিক ভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে’ ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের ১৬ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।

বহিষ্কৃতরা হলেন- সহ-সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা উর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি, সাংগাঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখি, কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তার।

অধিকতার তদন্তের মাধ্যমে এই বিশৃঙ্খলার সাথে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধর করেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা, সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা ও তাদের অনুসারীরা।

পর তাদের দুইজনকে ১৯ ঘণ্টা ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি। এমনকি তাদেরকে ফোনেও পাওয়া যায়নি। সহ-সভাপতিকে মারধরের পর শনিবার রাত থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন ইডেন ছাত্রলীগের একাংশ। তাদের সঙ্গে যুক্ত হন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।

সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, সিট বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে তাদের বিচার দাবি করেছেন ছাত্রলীগেরই ২০ নেত্রী। তারা সবাই বর্তমান কমিটির বিভিন্ন পদে রয়েছেন। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৩টায় ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের কাছে লিখিতভাবে তারা অভিযোগ জানান। একই সঙ্গে ১১টি দাবিও তোলেন তারা।

রিভা-রাজিয়ার বিচার দাবি করা নেত্রীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান কমিটির ১৬ জন সহ-সভাপতি, তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও একজন সাংগঠনিক সম্পাদক। এছাড়া অধ্যক্ষ বরাবর দেওয়া ওই লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন আরও অন্তত একশ জন সাধারণ শিক্ষার্থী।

রোববার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইডেন কলেজের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির ওই দুই সদস্য হলেন – কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার ও ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি।

গত ১৩ মে তামান্না জেসমিন রিভাকে সভাপতি ও সুলতানা রাজিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন বছর পর ইডেন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ৷ সেই কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্ত নেত্রীও ছিলেন তিলোত্তমা শিকদার ও বেনজির হোসেন নিশি। তদন্ত কমিটি গঠনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করল ইডেন ছাত্রলীগের একাংশের নেত্রীরা।

এত কিছুর মাঝে গণমাধ্যমকর্মীরা বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার সঙ্গে। তবে তাদের দুইজনের কেউই ফোন ধরেননি। এমনকি শনিবার রাতে ইডেন কলেজ কর্তৃপক্ষও বেশ কয়েক দফা এই দুই নেত্রীকে ফোন করেছেন। তাদের ফোনও ধরেননি ছাত্রলীগের এই দুই নেত্রী।

রোববার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে ভিড়তে শুরু করেছেন রিভা-রাজিয়ার অনুসারীরা। তারা ক্যাম্পাসের পুকুর পাড়ে অবস্থান নিয়েছেন। রোববার বিকাল পাঁচটায় ক্যাম্পাসে আসেন রিভারা।

তারা ক্যাম্পাসে আসতেই শুরু হয় দু’পক্ষের সংঘর্ষ। এতে আহত হন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া। পরে তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরমধ্যেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিরোধীদের বহিষ্কার আদেশ দিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে