দিগন্ত জুড়ে সবুজের সমারোহ, আমণের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২; সময়: ১২:৪৯ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
দিগন্ত জুড়ে সবুজের সমারোহ, আমণের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, পত্নীতলা : দু চোখ যতদুর যায় সবুজ আর সবুজ এ যেন সবুজের সমারোহ। ভারত সীমান্ত ঘেষা উত্তরের বরেন্দ্র জনপদ নওগাঁর পত্নীতলার মাঠ গুলো যেন প্রকৃতির সবুজ কন্যা হয়ে সেজেছ।

শস্য ভান্ডার খ্যাত ধান উৎপাদনের অন্যতম উপজেলা নওগাঁর পত্নীতলার মাঠ গুলোতে আগমণের আবাদ সবুজ শোভা বর্ধন করছে।

মৃদু মন্দ বাতাসে দোল খাচ্ছে কচি ধান গাছের সবুজ পাতাগুলো আর কৃষকের মনে সঞ্চারিত হচ্ছে স্বপ্ন আশা। এক সময় এই অঞ্চলে নানা সমস্যার কারণে তেমন ফসল হতো না একটি মাত্র ফসল হতো তাই জমি থেকেও ভাত হয়নি কৃষকের। স্থানীয় কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টা ও বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এর গভীর নলকূপ যেন আশির্বাদ হয়েছে কৃষকদের। এখন একটি জমিতে তিন ফসল আবার কোন কোন জমিতে ৪ টি ফসল হয়।

সরেজমিনে উপজেলায় কয়কটি মাঠ ঘুরে দেখা যায় ধানের গাছ গুলো সুন্দর সতেজ হয়েছে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে । আমণ মওসুমের মাঝামঝি এই সময় মাঠের পর মাঠ শোভা পাচ্ছে সবুজের সমারোহ। আর এ সময়েই উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আমন ধানের সবুজ গাছগুলোতে পোকামাকড় দমন, সার বিষ প্রয়োগ সহ নানা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে , এ বছর চলতি রোপা আমণ মওসুমে ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় সর্বমোট ২৭হাজার ২শ হেক্টর জমিতে আমণ চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল যা অর্জিত হয়েছে ২৬ হাজার ১৫০ হেঃ। আমের আবাদ বেড়ে ৫৬১৫ হে: হয়েছে। অনেক নতুন বাগান তৈরী হয়েছে। যার কারনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় নি। এই জমি থেকে ১০৪৬০০ মেঃ টন(চাউল) উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।

এবার উপজেলার বিভিন্ন মাঠে চাষ হয়েছে স্বর্ণা ৫, ব্রিধান ৪৯, ৫১, ৭১,৭৫,৯০ বিনা ১৭ ব্রিধান ৮৭ ব্রিধান ৩৪ স্থানীয় চিনি আতপ সহ উন্নত ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছে। যা এ উপজেলার চালের চাহিদা পূরন করেও বাহিরে রপ্তানী করতে পারবে কৃষকরা। এ বছর প্রথম দিকে যদিও আবহাওয়া খুব একটা অনুকূলে ছিলনা, সেচের মাধ্যমে রোপা আমন চাষাবাদ করেছে কৃষকরা তবুও রোগ বালাই কম। কৃষি অফিসের সময় মত পরামর্শ পেয়ে কৃষকরা জমিতে যে পরিশ্রম করেছে তাতে বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

উপজেলার পুঁইয়া গ্রামের কৃষক অলোক কুমার, নাদৌড় গ্রামের কৃষক মোতাহার, হাবিবুর, বালু ভোগা গ্রামের কৃষক পরিতোষ বর্মন সহ কয়েকজন কৃষক বলেন চলতি মওসুমের শুরু থেকেই বুক ভরা আশা নিয়ে দিনভর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মাঠে কাজ করছেন। এই অঞ্চলের কৃষকরা বিপুল পরিমান ফসল উৎপাদন করে অত্র অঞ্চলের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করেও ৭০/৭৫ ভাগ ধান দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে থাকে।

তবে একাধিক কৃষক বলেন তেল ও সারের দাম বৃদ্ধিতে এবং শুরুর দিকে পানি সেচ এবার রোপাআমণ চাষাবাদ করতে খরচ বেশী পরেছে তাই তেমন লাভ থাকবে না, ধানের ভাল ফলন ও ভাল দাম থাকলে হয়তো কিছুটা লাভ হতে পারে ।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন যেহেতু বৃষ্টিপাত তুলনামূলক ভাবে কম হয়েছে এবংইউরিয়া সার অধিকাংশ কৃষক সুষম মাত্রায় ব্যবহার করেছে তাই রোগবালাই এর আক্রমন কম আছে এবং শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে ফলন ভাল হবে আশা করছি।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে