বাগমারায় মাদ্রাসার অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২; সময়: ১১:১৫ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় মাদ্রাসার অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের খাঁপুর দাখিল মাদরাসায় অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবৈধ কমিটির বিরুদ্ধে এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ ও সচেতন মহলের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গোপনে তৈরি এই কমিটির মাধ্যমে একটি নিয়োগ বোর্ড পরিচালিত হবে বলে জানা গেছে। এতে অর্ধকোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে জানান তারা।

মাদরাসায় শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বৃহস্পতিবার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি স্বাক্ষরিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
পরে বিকেলে ওই ঘটনায় বাগমারা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি তুলে ধরেন একই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী সরদার।

ইউএনও’র দপ্তরের অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রাচীন ওই মাদরাসাটি এলাকার শিক্ষা বিস্তার ও শিক্ষার মানোন্নয়নে এলাকায় সুক্ষাতি অর্জন করেছিল। বিগত আট বছর পূর্বে মাদারাসাটিতে সুপারিনটেনডেন্ট হিসাবে নিয়োগ পান আব্দুল আজিজ। ওই পদে তার কাম্য যোগ্যতা না থাকায় তিনি অদ্যাবধি সহকারি শিক্ষকের স্কেলেই বেতন পেয়ে আসছেন। শিক্ষা স্তরের একটি দ্বিতীয় বিভাগ সহ সবগুলোতেই তৃতীয় বিভাগধারী আব্দুল আজিজ মাদরাসাটিতে সুপারেনটেনডেন্টের দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই এর শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট, শিক্ষার্থী কমে যাওয়া, মাদরাসা ফান্ডের বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও সহকর্মী সহ এলাকার লোকজনের সাথে কথায় কথায় দূর্ব্যহার করা শুরু করেন।

সর্বশেষ তিনি মাদরাসাটিতে গোপনে ৪টি পদে নিয়োগ দিতে কমিটি গঠন করেছেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান দুলাল। সদস্য করা হয়েছে একই ইউপি’র সাবেক সদস্য আব্দুর জব্বার ও বর্তমান সদস্য লুৎফর রহমান দুলালকে। কোন মিটিং সভা ও নির্বাচন না করে গোপনে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির গঠন করা হয়। এতে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় লোকজন সহ অভিভাবকরা অবৈধ কমিটি বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিরুপায় হয়ে ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী সরদার জানান, মাদরাসাটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এলাকার সচেতন মহল তাদের অসৎ উদ্দেশ্যকে প্রতিহত করার জন্য। আগামীতে নিয়োগের টাকা মাদরাসার উন্নয়নে ব্যয় করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমরা তাদের পাশে আছি।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান দুলালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ইউপি সদস্য আব্দুল জব্বার বলেন, ক্যাটাগরি অনুসারে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি সেখানে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে আছি। এর বেশি তিনি কোন কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান অভিযোগ আংশিক স্বীকার করে বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন কমিটি বিলুপ্ত অবস্থায় ছিল। পরে কমিটি করার জন্য বোর্ডের চিঠি আসে। সেখানে খুবই কম সময় থাকায় তড়িঘরি করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদাসার সুপারেনটেনডেন্ট আব্দুল আজিজ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোন গোপন কমিটি করা হয়নি। সরকারি নীতিমাল ও বিধিবিধান মোতাবেক কমিটি করা হয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম.এম মাহমুদ হাসান জানান, অভিযোগের বিষয়টি তার জানা নেই। এমন অভিযোগ হয়ে থাকলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হবে। সেখানে কোন অনিয়ম পেলে যথাযত আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে