গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবি সিংড়ার গ্রামের মানুষ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২; সময়: ৭:৩৩ অপরাহ্ণ |
গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবি সিংড়ার গ্রামের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর : নাটোরের সিংড়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযুক্ত শিক্ষক শাহীন আলীর উপযুক্ত বিচার ও মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারসহ কুমিড়া গ্রামের মানুষ। বুধবার দুপুরে কুমিড়া গ্রামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ধর্ষণ চেষ্টার শিকার গৃহবধূর ছেলে রমিম আলী, স্বামী জান্টু সরকার ও বৃদ্ধ শ্বাশুড়ী অভিযান বেওয়া। এসময় কুমিড়া গ্রামের প্রায় অর্ধশত নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার গৃহবধূর ছেলে রমিম আলী ও স্বামী জান্টু সরকার তাদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, পাকিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও কুমিড়া গ্রাম সভাপতি শাহীন আলী একজন লম্পট ও দুঃচরিত্র বটে। এলাকার ছাত্রী-যুবতী মেয়ে সহ অনেক গৃহবধূ তার লালসার শিকার। শিক্ষকতার আড়ালে এহেন আচরণে অনেকের সংসার ভেঙ্গেছে বলে অভিযোগ করেন তারা। শিক্ষক শাহীন আলী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় অবৈধ সম্পর্কে বাধ্য হয়ে কাজের মেয়েকে বিয়ে করেন।

পরবর্তীতে মুষ্টিগড় গ্রামের এক মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্কে আবার বিয়ে করেন এবং পাকিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সময় এক শিশু মেয়েকে বিয়ে করেন। এভাবে তিনি একাধিক বিয়ে করে অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছেন। তাছাড়া পাড়েরা গ্রামের এক হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ের সাথে কেলেঙ্কারির সময় হাতে-নাতে জনতার হাতে আটক হয়ে হুলহুলিয়া সামাজিক পরিষদে বিচারে নিজের অপরাধ স্বীকার করে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান শিক্ষক শাহীন আলী। সর্বশেষ চলতি মাসের ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে কুমিড়া গ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার সময় স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত শিক্ষককে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।

কিন্তু শিক্ষক শাহীন আলীর চরিত্র ঢাকতে ওই গৃহবধূর ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে জোর পূর্বক তাকে ঘরে ঢুকানো হয়েছে বলে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ রটাচ্ছেন অভিযুক্ত শিক্ষকের ভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহেল রানা। এখানে ঘটনার পর থেকে আইন শৃংখলার বাহিনী সহ স্থানীয় গন মাধ্যম কর্মীরা ভুক্তভোগীর ঘরের দরজা-জানালা ভাঙার কোন আলামত পাননি। তারা এই মিথ্যা অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে লম্পট শিক্ষক শাহীন আলীর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করা হয়।

এবিষয়ে উপস্থিত গ্রাম প্রধান আলহাজ্ব ফরকান আলী ও স্থানীয় কুমিড়া জামে মসজিদের সাবেক সভাপতি মশিহুর রহমান সহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত শাহীন আলী মাষ্টারের নির্যাতনে শিকার হয়ে অতি কষ্টে জীবন যাপন করছেন প্রায় ২০ জন গ্রামবাসী। আর তার দুঃচরিত্রের কারণে এলাকার বউ-ঝিরা ঘরের বাইরে বের হতে পারছিলনা। বর্তমানে গ্রামের এক গৃহবধুকে ধর্ষন চেষ্টা মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করায় শান্তিতে আছে গ্রামের মানুষ।

অভিযুক্ত শিক্ষকের ভাই ইউপি সদস্য সোহেল রানা বলেন, ষড়যন্ত্র করে তার ভাইকে ফাসানো হয়েছে। আর তার ভাই কোন লম্পট বা খারাপ চরিত্রের নয়। তবে তার ভাই একাধিক বিয়ে করেছেন স্বীকার করে বলেন, ইসলামে তো ৪টি পর্যন্ত বিয়ে করা যায়।

হুলহুলিয়া সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, কুমিড়া গ্রামের শিক্ষক শাহীন আলী একটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ের সাথে অনৈতিক কাজ করার সময় হাতে নাতে ধরা পড়ে। ওই সময় শিক্ষকতার কারণে বিবেচনা করে মুচলেকার মাধ্যমে ওই শিক্ষককে ছাড় দেয়া হয়।

উল্লেখ্য শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টায় উপজেলার কুমিড়া গ্রামের এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা আটক হলে শিক্ষক শাহীন আলীকে স্থানীয় জনতা পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়। ২০ সেপ্টেম্বর আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে