বঙ্গবন্ধু সেতুর পিলারের সাথে ধাক্কায় বাল্কহেড ডুবি, আটকে আছে আরেকটি
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর পিলারের সাথে বালু বোঝাই বাল্কহেড ধাক্কায় ডুবে গেছে। তখন বাল্কহেডে থাকা ৫ শ্রমিক লাইভ জেকেট পরে সাঁতরে তীরে উঠলেও সেতুর ৯ নং পিলারের সাথে বালু বোঝাই আরেকটি বাল্কহেড জোরে ধাক্কা লেগে আটকে আছে।
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ডুবে যাওয়া বাল্কহেডটি সিরাজগঞ্জ থেকে বালু নিয়ে নারায়নগঞ্জ ও আটকে বাল্কহেডটি সিরাজগঞ্জ থেকে বালু বোঝাই করে ফরিদপুর সিএনবি ঘাটের দিকে যাচ্ছিলো। এসব দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ মোসাদ্দেক হোসেন।
ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের শ্রমিক আক্তার হোসেন জানান, মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আমরা সিরাজগঞ্জ হাজী সাত্তারের বালুর মহল থেকে বালু ভর্তি করে বাল্কহেডটি নিয়ে নারায়নগঞ্জের দিকে রওনা দেই। নদীতে অতিরিক্ত স্রোতের কারনে পিলারের সাথে ধাক্কা লাগার পর আমাদের বাল্কহেডটি ডুবে যায়। তাতখনিক ভাবে আমরা ৫ জন লাইভ জেকেট পরে সাঁতরে বেলকুচির রান্ধুনীবাড়ী চরে এসে উঠি। আমরা ৫ জনেই সুস্থ্য আছি।
ডুবে যাওয়া বাল্কহেডির বিষয়ে নৌ-পুলিশকে জানিয়েছেন কি না জানতে চাইলে আক্তার হোসেন বলে, নৌ- পুলিশকে জানাতে গেলে সমস্যা আছে। তারা আমাদের আটকে রেখে টাকা আদায় করবে তাই এখান থেকেই চলে যাবো। মহাজন তার বাল্কহেড অন্য ভাবে উদ্ধার করবে।
প্রত্যাক্ষদর্শি বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর প্রকৌশলী ফারুক হোসেন বলেন, নদীতে অনেক পানি বাড়ছে নদীর প্রবল স্রোতর কারনে বাল্কহেডটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড়ের ১০ নং পিলারের সাথে ধাক্কা লাগে এবং সেখানেই ডুবে যায়। তার কিছুক্ষন পর ৯ নং পিলারের সাথে আরেকটি বালু বোঝাই বাল্কহেড জোরে ধাক্কা দিয়ে আটকে যায়।
গত দুই দিন আগে একই স্থানে বালু বোঝাই একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে। একজন নিখোজ এখনো উদ্ধার হয়নি বলে জানতে পেরেছি।।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম নৌ- ফারির ওসি আতাউর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এবিষয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, আজ সকালে সেতু মন্ত্রনালয়ের সচিব মো: মনজুর হোসেন স্যার বঙ্গবন্ধু সেতু পরিদর্শনে এসেছেন। স্যার সব কিছু দেখছেন। ডুবে যাওয়া বাল্কহেড সম্পর্কে জানিনা তবে একটি বালু বোঝাই বাল্কহেড আটকে আছে জানতে পেরেছি।
কঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, দুপুর ১২ টার দিকে জানতে পারি ১০ নং পিলারের সাথে বালু বোঝাই একটি বাল্কহেড ধাক্কা লেগে ডুবে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে নৌ-পুলিশকে জানিয়েছি। পরে কি হয়েছে তা জানিনা। তার ঘন্টা খানেক পরে আমাদের ফোর্স জানায় ৯ নং পিলারের সাথে বালু বোঝাই আরেকটি বাল্কহেড জোরে ধাক্কা দিয়ে মাঝামাঝি অবস্থায় আটকে আছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই। দেখি প্রচন্ড স্রোত সেখানে পিলারের সাথে আটকে আছে বাল্কহেডটি। এতে নদীর স্রোতের পুরো চাপ গিয়ে পরছে পিলারের সাথে। এটি বিআইডাব্লিউটিএ এর রেসকিউ নিয়ে এসে দ্রুত সরাতে হবে। তা না হলে যে কোন দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিআইডাব্লিউএকে খবর দেবে নৌ-পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টম্বর বঙ্গবন্ধু সেতুর ৯ নং পিলারের সাথে একটি বালু বোঝাই বাল্কহেড ধাক্কায় ডুবে যায় এবং একজন নিখোজ হয়। ঘটনার দুইদিন পার হলেও এখনো নিখোজ ব্যাক্তিকে উদ্ধার করতে পারেনি নৌ-পুলিশ।