লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পেয়ে ফেসবুকে পত্র

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২; সময়: ১:০০ অপরাহ্ণ |
লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পেয়ে ফেসবুকে পত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ: হাতে লেখা চিঠির প্রচলন এখন খুব একটা নাই। কিন্তু একটি চিঠি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার কেন্দ্রে। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশনে গত রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) ট্রেনের টিকিট না পেয়ে এক অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক তার ক্ষোভ প্রকাশ করে খোলা চিঠি লিখেন।

তিনি হলেন, নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোবারক আলী শেখ। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার দোগাছী গ্রামের বাসিন্দা। টিকিট বঞ্চিত শিক্ষকের পত্রটি নিন্দার ঝড় তোলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

চিঠিতে ওই শিক্ষক লিখেছেন-
‘সান্তাহার রেলওয়ে টিকিট কাউন্টারে দাঁড়িয়েছি রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬.২২ টায় ১ নং কাউন্টারে আমি ১ম ব্যক্তি। আশা ছিল ২টা টিকেট পাব এসি ¯স্নিগ্ধা। তারিখ ১৫/০৯/২২ ট্রেন কুড়িগ্রাম। ৮.০০ টায় কাউন্টার খোলা হলো। টিকেট যিনি দিচ্ছেন উনি একজন মহিলা। বললাম ‘মা’ আামাকে এসি ২টা টিকিট দেন। উনার উপরের বস একজন, যিনি টিকেট কাউন্টারের হেড।

তাঁর নির্দেশ মোতাবেক আমাকে টিকেট না দিয়ে বসের জন্য এসি স্নিগ্ধার সব টিকেট তাঁর বসকে দিয়ে দিলেন। আমি কয়েক বার তাঁদের কাছে অনুরোধ করেও ব্যর্থ হয়েছি। আমার বয়স ৬৫ বছর পেরিছে। আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। বসের কথা রানীনগরের এসি ল্যান্ড স্যারের সব টিকেট লাগবে। তাই তিনি আমাকে ২টা টিকেট (এসি স্নিগ্ধা) দিতে পারবেন না।

আমি অনেক দুংখ পেয়েছি। কষ্ট পেয়েছি। বুঝাতে পারছিনা নিজের মনকে। কাউন্টার থেকে বেড়িয়ে বাসায় আসলাম।

মো. মোবারক আলী শেখ
অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক
নওগাঁ কেডি সরকারী উবি।’

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোবারক আলী শেখ বলেন, পত্রে যা লিখা আছে সবই সঠিক। আমার চাওয়া ছিল শুধু দুইটি টিকিট। বার্ধক্য জনিত বা বয়স্ক যারা টিকিট কিনতে লাইনে দাঁড়ায় সবাইকে সম্মান করা উচিত বলে মনে করি। তিনি শিক্ষক বা যে শ্রেনীর মানুষই হোক না কেন। পরে কয়েকটি জায়গা থেকে ট্রেনের টিকিট দেওয়ার জন্য আমাকে ফোন করা হয়েছিল যা প্রত্যাখান করেছি।

এ বিষয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারি নাসরিন সুলতানা বলেন, স্টেশনের দুই কাউন্টার থেকে নিয়মিত এবং অগ্রীম টিকিট দেওয়া হয়। তার (শিক্ষক) চাহিদা ছিল এসি চেয়ারের দুইটি টিকিট। কম্পিউটারে যখন সার্চ করা হলো তখন একটি টিকিট দেখা যায়। যেহেতু সিট নাই এজন্য তাকে এসি কেবিনের কথাও বলেছিলাম কিন্তু তিনি নিতে চাননি। তিনি অন্য কোন ট্রেনের টিকিটও নিতে চান না। পরে তিনি ফেসবুকে ভূল তথ্য দিয়েছেন। আমি নাকি এসি টিকিট প্রিন্ট করে বসের হাতে দিয়েছি। যা আমার কাছেও দুংখজনক মনে হচ্ছে। সে সময় আমার পাশের কাউন্টার থেকে কয়েকটি এসি টিকিট বিক্রি হয়েছে। তিনি কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন বুঝতেছিনা।

সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং মনিরুল করিম বলেন, অগ্রীম টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই কাউন্টার থেকেও টিকিট বিক্রি হয়। ওই শিক্ষককে টিকিট দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে দেখা যায় তার চাহিদা মতো টিকিট নাই।

এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার রেজাউল করিম ডালিম বলেন, ওইদিন টিকিট বিক্রিয়ের সময় কি হয়েছিল জানা নেই। তবে ফেসবুকে একটি চিঠি দেখে বিষয়টি অবগত হয়েছি। তবে এটি ছোটখাটো বিষয় বলে মনে হয়েছে।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে