কুষ্টিয়ায় বিপ্লবী বাঘা যতীনের মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্বাধীনতাসংগ্রামী শহীদ যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের ১০৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। যিনি বিপ্লবী বাঘা যতীন নামেই পরিচিত। এউপলক্ষে শনিবার সকালে কয়া মহাবিদ্যালয়ের সভাকক্ষে এক নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কয়া বাঘাযতীন থিয়েটারের সহযোগীতায় সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি।
এর আগে কয়া মহাবিদ্যালয় সংলগ্ন বাঘাযতীনের আবক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বাঘাযতীন সহ সকল শহীদদের স্মরণে একমিনিট নিরাবতা পালন করা হয়।
নাগরিক সমাবেশে ভিডিও বার্তায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, কুষ্টিয়া ৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ।
উপজেলা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এটিএম আবুল মনসুর মজনুর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল, কুমারখালী পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মমতাজ বেগম সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বিপ্লবী বাঘা যতীন ১৮৭৯ সালের ৭ই ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালীর গড়াই নদীর তীরে কয়া গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মলাভ করেন। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী নেতা। পিতা উমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় আর মাতা শরৎশশী। পৈত্রিক বাড়িছিল ঝিনাইদহ জেলায়। মাত্র ৫ বছর বয়সে পিতার মৃত্যু হয়। এরপর তার মা যান বাবার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। মা ছিলেন স্বভাবকবি। যতীনের বড় মামা বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায় ছিলেন কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরদের শিলাইদহের জমিদারীর আইনজীবী।
ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। বাঘা যতীন ছিলেন বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর দলের প্রধান নেতা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্বে কলকাতায় জার্মান যুবরাজের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে তিনি জার্মানি থেকে অস্ত্র ও রসদের প্রতিশ্রুতি অর্জন করেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জার্মান প্লট তাঁরই মস্তিস্কপ্রসূত।
উড়িষ্যার মহাফেজকানার রক্ষিত নথিপত্র উদ্ধার করতে গিয়ে যতীন তার সঙ্গী সহ সশস্ত্র পুলিশের মুখোমুখি হলেন। ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সূর্যাস্তের সংগে শেষ হল এই যুদ্ধের। যুদ্ধে আহত যতীন বালেশ্বর সরকারী হাসপাতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করলেন পরেরদিন ১০ সেপ্টেম্বর।