নওগাঁয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, মুহুরি কারাগারে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২; সময়: ৭:২৩ অপরাহ্ণ |
নওগাঁয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, মুহুরি কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : জরিমানার টাকার ভুয়া ব্যাংক চালান সরবরাহ করে আদালতকে প্রতারিত করার অভিযোগে এক মুহুরিকে (আইনজীবীর সহকারী) জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ওই ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজীবীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইমতিয়াজুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

জেলহাজতে পাঠানো ওই মুহুরির নাম মহিদুল ইসলাম। তিনি নওগাঁ পৌরসভার আরজি-নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ব্যক্তিরা হলেন নওগাঁ আদালতের আইনজীবী বিপ্লব কুমার দাস, জেলার সাপাহার উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা নাছির উদ্দিন ও তাঁর বাবা শহিদুল ইসলাম।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সাপাহার উপজেলার শিমুলতলী গ্রামের বাসিন্দা আবু নৈয়ম মো. মাসুম নামের এক ব্যক্তির করা চেক প্রত্যাখ্যানের (চেক ডিজঅনার) একটি মামলায় ২০১৯ সালের ২ মে অভিযুক্ত নাছির উদ্দিনকে এক বছরের কারাদণ্ড (বিনাশ্রম) এবং ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নওগাঁর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩। বিধি অনুযায়ী জামিন আবেদনের শর্ত হিসেবে জরিমানার ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে বিচার বিভাগে জমা দিয়েছেন মর্মে আদালতে ব্যাংক চালানের কাগজ জমা দেন আসামিরা। সে অনুযায়ী আসামি নাছির উদ্দিনের জামিন আবেদন আদালত মঞ্জুর করেন। জামিন নিয়ে তিনি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। কিন্তু আপিল আদালত (নওগাঁ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২) বিচারক আদালতের সাজা বহাল রাখেন।

আপিল আদালতের রায়ের পর বাদী আবু নৈয়ম মো. মাসুম চলতি বছরের ১৭ জুলাই আসামির জমা দেওয়া জরিমানার ৫০ শতাংশ টাকা উত্তোলনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন এবং আদালত তা মঞ্জুর করেন। কিন্তু টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে জানা যায়, ব্যাংক চালান অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে কোনো টাকাই জমা হয়নি। পরে আদালতের নির্দেশে সোনালী ব্যাংক নওগাঁ শাখা থেকে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে জানা যায়, আদালতে জমা দেওয়া ব্যাংক চালানটি সঠিক নয় এবং ওই চালানের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো টাকা ওই শাখায় জমা হয়নি।

এ ঘটনায় নওগাঁ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত–৩–এর বিচারক খোরশেদ আলম নিজে বাদী হয়ে প্রতারণার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নাছির উদ্দিন, তাঁর বাবা শহিদুল ইসলাম, আইনজীবী বিপ্লব কুমার দাস ও মহুরি মহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নওগাঁর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২১ জুলাই মামলা করেন। ওই মামলায় আসামিদের আজ আদালতে হাজিরার দিন ধার্য ছিল।

দুপুরে মহুরি মহিদুল ইসলাম আদালতে হাজিরা দিতে এলে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন নওগাঁর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমতিয়াজুল ইসলাম। আর আইনজীবী বিপ্লব কুমার দাসসহ প্রতারণা মামলার অপর তিন আসামি আদালতের নির্দেশ হাজিরা না দেওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে