জমির বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাবাকে খুন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২; সময়: ১২:০২ পূর্বাহ্ণ |
জমির বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাবাকে খুন

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : জমির বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এক ছেলে নিজের বাবাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পিবিআই। ২০১৮ সালের ৩ মে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বৈষ্ণবদাশ গ্রামের সেকেন্দার আলী বাদশাকে হত্যা করা হয়। এরপর ২০ জুন নিহতের ছেলে জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় জমি নিয়ে বিরোধে জড়িত প্রতিপক্ষের লোকজনকে আসামি করা হয়।

চার বছর আগে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার ‘রহস্য উন্মোচন’ করে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে জাহিদুল ইসলাম এবং তার সঙ্গী আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে আসামি জামাত আলী ও আব্দুল মোন্নাফকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, ২০১৮ সালের ৩ মে রাত ১০টার দিকে সেকেন্দার আলী নিজেদের পুকুর পাড়ে একা বসেছিলেন। এ সময় আসামি আব্দুল মোন্নাফ সেকেন্দারের মুখ চেপে ধরে এবং মোটা গেঞ্জি দিয়ে গলা পেঁচিয়ে ধরে। তখন অপর আসামি আব্দুল আজিজ সেকেন্দারকে জড়িয়ে ধরে।

“পরে জাহিদুল ও জামাত আলীসহ চারজন মিলে পাঁজাকোলে সেকেন্দারকে ৫০০ গজ দূরে একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে ৫/৬ মিনিট নাক-মুখ চেপে ধরে রাখলে সেকেন্দারের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। এতে তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে তারা বাঁশঝাড়ের একটি নালার কাছে সেকেন্দারকে ফেলে রেখে চলে যায়।“

পুলিশ সুপার আরও বলেন, আসামি জামাত আলী বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সেকেন্দারের অবস্থা দেখতে ঘটনাস্থলে যান। সেসময় এক কিশোর (১৮) দেখতে পান জামাত আলী নিজে সেকেন্দারকে ধরে টানা-হেঁচড়া করছেন। তখন জামাত আলী ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন। এরপর নিহতের ছেলে জাহিদুল মামলার এজাহারে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেন।

জাহিদুল মামলায় অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের ৪ মে সকালে তার বাবা সেকেন্দার আলী বাদশা প্রতিপক্ষ আইয়ুব আলীর বাড়ির পাশে জমির ধান দেখতে গিয়ে নিরুদ্দেশ হন। বিকালে জাহিদুলের প্রতিবেশী মামা জামাত আলী একটি বাঁশ ঝাড়ে সেকেন্দার আলীকে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে সেকেন্দার আলীর বাড়িতে খবর দিলে তাকে উদ্ধার করে রংপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।

জাহিদুলের মামলায় আসামি করা হয়, প্রতিপক্ষ আইয়ুব আলী, রানু মিয়া, ইউনুস আলী ও রফিকুলকে। আর সেই মামলায় সাক্ষী ছিলেন ১৮ বছরের সেই কিশোর। সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে জামাত আলীকে বাঁশঝাড়ে সেকেন্দারকে টানা-হেঁচড়া করতে দেখার বিষয়টি উল্লেখ করে।

এ আর এম আলিফ জানান, ২০২২ সালের ৯ জুন পিবিআই আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে। পিবিআই তদন্তে জানতে পারে, জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষ আইয়ুব আলীদের ফাঁসিয়ে দিতে সেকেন্দার আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে নিহতের ছেলে জাহিদুল ইসলাম এবং তার সঙ্গী জামাত আলী, আব্দুল মোন্নাফ ও আব্দুল আজিজ।

এ কারণে পিবিআই জামাত আলীকে গ্রেপ্তার করে। জামাত আলী আদালতে সেকেন্দার আলীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এরপর আব্দুল মোন্নাফকেও গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। সবশেষ জাহিদুলকে মঙ্গলবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পিবিআই পুলিশ সুপার।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে