মান্দায় পপুলার বীমা কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : নওগাঁর মান্দায় গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারনা ও হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিঃ মান্দা সাংগঠনিক অফিসের বিরুদ্ধে। অফিস কর্তা আব্দুস সাত্তার লাপাত্তা থাকায় বীমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও চুক্তিবদ্ধ টাকার চেক পাচ্ছেন না তাঁরা। এতে মেয়াদোত্তীর্ণ বীমার টাকা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শতাধিক গ্রাহক।
গ্রাহকদের অভিযোগ, পপুলার ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিঃ নওগাঁর সার্ভিস সেল ইনচার্জ আব্দুস সাত্তার দীর্ঘদিন অফিসে আসেন না। কবে, কখন অফিসে আসেন গ্রাহকেরা এর কিছুই জানতে পারছেন না। রিসিভ করেন না মুঠোফোন। অফিসে আসলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাঁদের বিদায় করে দিচ্ছেন হিসাব কর্মকর্তা মানিক কুমার।
উপজেলার শামুকখোল গ্রামের গ্রাহক আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বাৎসরিক ৫০৯০ টাকার কিস্তিতে ১২ বছরের জন্য চুক্তিনামা সম্পাদন করেছিলাম পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিঃ সঙ্গে। আমার পলিসি নম্বর ১২১০০০৫০০৪-০। এরপর মান্দা সাংগঠনিক অফিসের মাধ্যমে সঠিক নিয়মে কিস্তির টাকা পরিশোধ করেছি। এতে জমাকৃত টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৬১ হাজার ৮০ টাকা। গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমার বীমার মেয়াদ শেষ হয়।
গ্রাহক আনোয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, এরপর চেকের আশায় দীর্ঘদিন হয়রানীর পর গত ২৮ জুলাই বীমা কোম্পানির পক্ষে আমাকে ৩৪ হাজার ৯৪৪ টাকার একটি চেক প্রদান করা হয়। বীমা অংকের সঙ্গে চেকের টাকার পরিমাণে গড়মিল থাকায় মান্দা সাংগঠনিক অফিসে চেকটি ফেরত প্রদান করেছি।
বুড়িদহ গ্রামের নুরজাহান বিবি বলেন, বাৎসরিক ২ হাজার টাকার চুক্তিতে ১২ বছরে ২৪ হাজার টাকা জমা দেন। মেয়াদ শেষে তাঁকে দেওয়া হয়েছে ১২ হাজার টাকার চেক।
একই গ্রামের গ্রাহক রাবেয়া বিবি ও ইউনুস আলীরও বীমার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালে। এ দুই গ্রাহক বীমার যাবতীয় কাগজপত্র মান্দা সাংগঠনিক অফিসে জমা দেন। এরপর দিনের পর দিন বীমা অফিসে ধর্ণা দিয়েও আজ পর্যন্ত টাকার চেক পাননি।
গ্রাহকের অভিযোগ, অফিসে ঘুরে ঘুরেও সার্ভিস সেল ইনচার্জ আব্দুস সাত্তারের দেখা পাওয়া যায় না। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তিনি বাইরে বাইরে পালিয়ে বেড়ান। এমনকি মোবাইলফোনও রিসিভ করেন না। তাঁর এমন আচরণে বীমার টাকা নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গত এক সপ্তাহ ধরে মান্দা সাংগঠনিক অফিসে যোগাযোগ করেও দেখা মেলেনি নওগাঁ সার্ভিস সেল ইনচার্জ আব্দুস সাত্তারের। মোবাইলফোন রিসিভ না করায় তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে হিসাব কর্মকর্তা মানিক কুমার বলেন, স্যার জরুরী কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। অফিসে এলে আপনারা তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বিষয়ে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।