ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সমঝোতার সম্ভাবনা, কাটবে জ্বালানি সংকট

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২; সময়: ১:১২ অপরাহ্ণ |
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সমঝোতার সম্ভাবনা, কাটবে জ্বালানি সংকট

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ইরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে আলোচনার অগ্রগতিতে ইউরোপের সামনে জ্বালানি সংকট সমাধানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে ইরান থেকে তেল আমদানি করতে পারবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশ্ববাজারে প্রতিদিন ১৩ লাখ ব্যারেল তেল সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে তেহরানের।

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে মস্কো। এ পরিস্থিতিতে বর্তমানে নজিরবিহীন জ্বালানি সংকটে বিপর্যস্ত ইউরোপীয় দেশগুলো। এমতাবস্থায় রাশিয়ার তেলের বিকল্প সন্ধান করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তাদের জন্য আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে পরমাণু ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতার সম্ভাবনা।

২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন। পাশাপাশি ইরানের তেল রফতানির ওপর অবরোধ আরোপ করে ওয়াশিংটন। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইরানের পরমাণু ইস্যুতে নতুন করে তেহরানের সঙ্গে তাদের সমঝোতার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আর এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

পরমাণু কর্মসূচিতে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে রফা হলে, উঠে যেতে পারে ইরানের তেল রফতানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। সে ক্ষেত্রে ইরানি তেল আমদানিতে আর কোনো বাধার মুখে পড়বে না ইউরোপীয় দেশগুলো। এ জন্য দুপক্ষ যেন দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছায় সে ব্যাপারে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ইইউ। ধারণা করা হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে বিশ্ববাজারে প্রতিদিন এক মিলিয়ন ব্যারেলেরও বেশি তেল সরবরাহ করতে সক্ষম হবে তেহরান, যা রাশিয়ার তেলের বিকল্প উৎস জোগাবে ইউরোপকে।

এদিকে করোনা লকডাউনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক চীনের জ্বালানির চাহিদা কমে যাওয়ায় তেলের দাম পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক। এ অবস্থায় তেলের দাম হ্রাস ঠেকাতে উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে ওপেক। তবে যদি ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়, তাহলে ওপেকভুক্ত দেশগুলো উৎপাদন কমালেও এর খুব একটা প্রভাব পড়বে না তেলের দামে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে তেহরান প্রতিদিন গড়ে ১৩ লাখ ব্যারেল তেল বিশ্ববাজারে যোগ করতে পারবে বলে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

২০১৮ সালে পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক চুক্তি বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত ইরান ছিল যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও রাশিয়ার পর বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। এখনো উত্তোলন করা বিপুল পরিমাণ তেল মজুদ অবস্থায় রয়েছে ইরানের হাতে। তেল সরবরাহের জন্য তাদের হাতে রয়েছে প্রয়োজনীয় জাহাজও। ফলে খুব সহজেই বিশ্ববাজারে দ্রুত তেল সরবরাহে সক্ষম তেহরান। পরমাণু ইস্যুতে সমঝোতা হলে ইরানের হাতে থাকা এই তেল বিশ্ববাজারে প্রবেশের পথ খুলে যাবে, যা জ্বালানি সংকট কাটিয়ে উঠতে ইউরোপকে অনেকটাই সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে