ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে ভুয়া ভিডিও সরাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২২; সময়: ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ |
ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে ভুয়া ভিডিও সরাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এমন উসকানিমূলক ৬ ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেন আদালত।

দুই সপ্তাহের মধ্যে নির্দেশ পালন করতে ফেসবুক-ইউটিউব কর্তৃপক্ষ ও বিটিআরসিকে বলা হয়েছে। বিচারপতি খসরুজ্জামান ও বিচারপতি ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

২১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিলুফার আনজুম ও জজ কোর্টের ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলামের পক্ষে এ নোটিশ পাঠান ব্যারিস্টার আরাফাত হোসেন খান। পরে আজ এ বিষয়ে রিট দায়ের করা হয়।

ফেসবুক ও ইউটিউব বাংলাদেশের পাবলিক পলিসিবিষয়ক প্রধান শাবনাজ রশিদ দিয়া, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।

নোটিশে বলা হয়েছিল, ফেসবুক ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষ অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়াতে উসকানিমূলক পোস্টের ওপর নজর রাখতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও জনজীবনের শৃঙ্খলার জন্য হুমকি। ভুয়া তথ্য রাষ্ট্রযন্ত্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে যা সংবিধানের ২৭,৩১,৩৮ ও ৪৪ ধারার লঙ্ঘন। বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন আইনের ৩০, ৬৪, ৭৬, ৯৭ এ এর ধারা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ৮, ১৩, ১৬, ২৫ ধারার লঙ্ঘন হয়েছে। লঙ্ঘিত হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৪৬ ধারাও।

এতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি দেখা গেছে ফেসবুক ও ইউটিউব তাদের নজরদারি কৌশল পুরোপুরি অনুসরণ করছে না। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটছে। বাংলাদেশে প্রচুর ভুয়া সংবাদ, কনটেন্ট, ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। এতে করে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বুদ্ধিজীবীর সম্মানহানি হচ্ছে।

পররাষ্ট্রনীতির অনেক স্পর্শকাতর তথ্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সম্প্রচারের কারণে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বাংলাদেশেরও। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করা এবং দেশে অস্থিরতা তৈরির উদ্দেশ্যে এমন কাজ করা হচ্ছে।

লিগ্যাল নোটিশে আরও বলা হয়, করোনা পরবর্তী সময়ে ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে।। বিশ্ব অর্থনীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। পশ্চিমা দেশসহ বেশ কিছু দেশ মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব সমস্যা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির মতো সমস্যায় জর্জরিত। সারাবিশ্বেই এখন অস্থিরতা তৈরিতে ফেসবুক ও ইউটিউবকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে গুজব ও ভুয়া খবর।

নোটিশে দাবি করা হয়, বিটিআরসি ও ডিএসএর স্পষ্ট নীতি এবং ফেসবুক ও ইউটিউবের সাম্প্রতিক রেগুলেশন না জানার কারণে ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ছে এবং সহিংসতা ও অস্থিরতা তৈরি করছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রকাশ করা এসব ভিডিও তাদের নিজেদের নীতি পরিপন্থী।

ওইদিন ব্যারিস্টার আরাফাত হোসেন খান এ বিষয়ে বলেছিলেন, ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়াগুলো অবশ্যই আমাদের বাকস্বাধীনতা চর্চার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে বাকস্বাধীনতার চর্চার নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আমরা যেন সহিংসতা ও নাশকতাকে উৎসাহিত না করি।

এ বিষয়ে অবশ্যই বিটিআরসি, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি, ফেসবুকও ইউটিউবসহ সব কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী আরও সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে