স্বর্ণালি কণ্ঠ আব্দুল জব্বারকে হারানোর দিন আজ

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২২; সময়: ৯:২২ পূর্বাহ্ণ |
স্বর্ণালি কণ্ঠ আব্দুল জব্বারকে হারানোর দিন আজ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সবুজ চত্বরে গোল হয়ে বসে আছে একদল তরুণ-তরুণী। সন্ধ্যা নেমে এলেই তারা সেখানে জড়ো হয়। এক বন্ধু সজীবের গিটার ও গলার সঙ্গে গলা ছাড়ে বাকি সব বন্ধুরাও। তারা প্রতিদিন যে গানগুলো গায় তার মধ্যে একটা গান প্রায়ই গাওয়া হয়- ‘ওরে নীল দরিয়া/আমায় দে রে দে ছাড়িয়া’।

শুধু ওরা নয় টিএসসি ও এর আশপাশে আরও কয়েকটি গান দল বসে মাঝে মাঝে। তাদের গলায়ও ভেসে আসে এ গানের সুর। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা ক্যাম্পাসগুলোতে গিটারে ও গানে ‘ওরে নীল দরিয়া’-ই যেন তরুণদের সবচেয়ে কাছের, সবচেয়ে প্রিয় এক গান। যেখানে মনের মানুষকে কাছে পাওয়ার এক অন্যরকম অভিব্যক্তি বাঙালির চিরায়ত যাপনে উঠে আসে।

শহীদুল্লা কায়সারের কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৭৮ সালে আবদুল্লাহ আল মামুন ‘সারেং বউ’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন। আর সেখানেই মুকুল চৌধুরীর লেখা ও আলম খানের সুরে এ গানকে শাশ্বত করেছেন দরাজ কণ্ঠের গায়ক আব্দুল জব্বার। অসংখ্য কালজয়ী গানের গায়ক কিংবদন্তি এই শিল্পীর চলে যাওয়ার দিন আজ। ২০১৭ সালের আজকের দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছিলেন। আবদুল জব্বার মানেই শ্রোতাপ্রিয় সব গান।

যেখানে আছে কথা আর সুরের মোহময়তা। কখনো তা বেদনা-বিধুর, কখনো আনন্দের, আবার কখনোবা প্রেরণার। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘এতটুকো আশা’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৬৮ সালে। সেখানে আব্দুল জব্বার সত্য সাহার সুরে গাইলেন ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনে পরাজয়/দুখের দহনে করুণ রোদনে তিলে তিলে তার ক্ষয়’। সে গানের কি আবেদন, যেন আজও ফুরাবার নয়।

একই বছর মহসিন পরিচালিত ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ চলচ্চিত্রে রাজা হোসেনের সুরে উপহার দিলেন ‘সুচরিতা যেওনাকো, আর কিছুক্ষণ থাকো’। ১৯৭০ সালে এসে এহতেশাম পরিচালিত ‘পিচ ঢালা পথ’ চলচ্চিত্রে আহমদ জামান চৌধুরীর লেখা ও রবিন ঘোষের সুরে গাইলেন আরেক চিরসবুজ গান ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি/তার সাথে এই মনটাকে বেঁধে নিয়েছি’। অবচেতন মনে বাঙালি শ্রোতা আজও গেয়ে ওঠে এ গান।

আব্দুল জব্বারের মতো ক্ষণজন্ম শিল্পীরা মৃত্যুহীন। তারা সুর দরিয়ার সারেং হয়ে আগামী প্রজন্মকে পথ দেখিয়ে যাবেন চিরকাল।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে