নষ্ট ইভিএমের তথ্য সংগ্রহ করছে ইসি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২২; সময়: ৯:১৭ পূর্বাহ্ণ |
নষ্ট ইভিএমের তথ্য সংগ্রহ করছে ইসি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইলেক্ট্রনিক্স ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু ইসির হাতে থাকা দেড় লাখের মতো ইভিএমের মধ্যে কতগুলো সচল আছে, আর কতগুলো নষ্ট- সেই তথ্য নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে। তাই মাঠপর্যায় থেকে সেই তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ শুরু করেছে ইভিএম প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) এই তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি জানিয়েছেন খোদ ইভিএমের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, বর্তমানে দেড় লাখ ইভিএম আছে। নষ্টের পরিমাণ জানার জন্য মাঠ পর্যায়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা তথ্য পাঠাবে। যেহেতু পাঁচ বছর হয়েছে। আমরা দশ শতাংশ নষ্ট ধরতে পারি। যেসব মেশিন অচল বা নষ্ট হয়েছে, সেগুলো ওই রকম নষ্ট হয়নি। মেইনটেনেন্সের জন্য যে চুক্তি আছে, তাতে বিএমটিএফ নষ্ট মেশিনগুলো সচল করে দেবে।

এর আগেও ইভিএম সংরক্ষণের বিষয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। এমনকি ইসির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকল্প পরিচালকও এ কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইভিএম সংরক্ষণ করাটা চ্যালেঞ্জ। সেটা মাঠপর্যায়ে সেভাবে ওভারকাম করা হয়নি। তবে সচিবালয় চেষ্টা করে যাচ্ছে। মাঠ কর্মকর্তারাও যথেষ্ট চেষ্টা করছেন। বিএমটিএফের স্টোরেজটা স্ট্যান্ডার্ড। সেভাবে আমরা ওয়্যারহাউজ করার চিন্তা-ভাবনা নিয়ে এগোচ্ছি, যেন মাঠপর্যায়ে রাখা যায়।’

ইভিএম কিনতে বড় প্রকল্প নেওয়ার উদ্যোগ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য নতুন করে ইভিএম কিনতে বড় প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই প্রকল্প সরকারের কাছে পাঠানোর চেষ্টা করা চলছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ রাকিবুল হাসান।

বিষয়টিতে তিনি বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বড় ধরনের কেনাকাটা আছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে কেনাকাটার সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলব। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি আমরা প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়ে দেব। প্রকল্প অনুমোদন হলে কেনাকাটার প্রক্রিয়া শুরু হবে- এমনটা আশা করতে পারি।

সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, বিএমটিএফ এ বিষয়ে অভিজ্ঞ। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। মেশিনগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে পাবো। তারপর আস্তে আস্তে মাঠপর্যায়ে পাঠাব। ইভিএম সংরক্ষণের জন্য ৩০টি জেলায় বাসা-বাড়ি ভাড়া নিয়ে রাখা হয়েছে। অন্যান্য জায়গায় মাঠপর্যায়ে রাখা হয়েছে। নতুন প্রজেক্টে ওয়্যারহাউজ তৈরির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। তা না হলে বিকল্প পন্থায় যাব।

এ সময় প্রকল্প ব্যয় কেমন হবে সে সম্পর্কেও ধারণা দেন প্রকল্প পরিচালক। তিনি বলেন, আগের প্রজেক্ট তিন হাজার ৮০০ কোটি টাকার ছিল। এটা তো পাঁচ বছর আগের ছিল। ইভিএমে কেনাসহ অন্যান্য ব্যয়ে এবার কিছু তারতম্য হবে। টোটাল কস্টিং করতে পারিনি। সেপ্টেম্বরে হয়তো বলতে পারব, বিষয়টি নিয়ে এখনও কাজ করছি। নতুন প্রকল্পে যে ইভিএমগুলো আসবে, এতে নতুন করে কোনো সংযোগ হচ্ছে না। এটা পারফেক্ট মেশিন। এটার মধ্যে সংযোগ-বিয়োজনের প্রয়োজন নেই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইভিএমের এই প্রকল্প পরিচালক বলেন, ১৫০ আসনে বলতে মোট কত ভোটারের জন্য ইভিএম ব্যবহার করা হবে তার ওপর নির্ভর করবে মেশিন কতটি লাগবে। সব আসনে ভোটার সংখ্যা সমান নয়। তাই বিষয়টি নিয়ে সচিবালয় কাজ করছে। শিগগিরই হয়তো বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

বিদ্যমান ইভিএমে ভোট কত আসনে ভোট সম্ভব?

গত সোমবার (২২ আগস্ট) ইসির বৈঠকের পর জানানো হয়- তারা ৩০০ আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫০টিতে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ইসির হাতে থাকা ইভিএম দিয়ে সর্বোচ্চ ৮০টি আসনে ভোট করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে বাকি কত আসনের জন্য কতগুলো ইভিএম কেনা যাবে সে বিষয় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন গণমাধ্যমের সঙ্গে।

বিষয়টিতে তিনি বলেছেন, ইসির হাতে থাকা ইভিএম দিয়ে ৭০ থেকে ৮০টি আসনে নির্বাচন করার সক্ষমতা আছে। কিন্তু কতটা আসনে ভোট হবে তখন বলা যাবে। দেখা গেল মেশিন হয়েছে বা সক্ষমতা নেই তাহলে ৭০-৮০টাও হতে পারে, আবার ৫০টাতেও হতে পারে। তবে ১৫০টির ওপরে হবে না। মিনিমাম ধরে রাখেন ৭০-৮০টা।

কম-বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই কমিশনার বলেন, কোনো কারণে যদি আমরা নতুন মেশিন কিনতে না পারি, কেননা হার্ডওয়ার পুরোটাই বিদেশ থেকে আসে। তারা যদি না দিতে পারে। তখন হয়তো আর কিনতে পারব না। আবার ফান্ড যদি না পাই তাহলেও তো কিনতে পারব না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে