যুক্তরাজ্যে খরার ঝুঁকি, কৃষি বিপর্যয়ের আশঙ্কা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২২; সময়: ৩:৩৭ অপরাহ্ণ |
যুক্তরাজ্যে খরার ঝুঁকি, কৃষি বিপর্যয়ের আশঙ্কা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ১৯৩৫ সালের পর চলতি বছরের জুলাইয়ে সবচেয়ে শুষ্কতম মাস দেখেছে যুক্তরাজ্য। তখন দেশটির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠে।

সেটি কমলেও শুষ্কতা কমেনি দেশটির বিভিন্ন এলাকায়। এরইমধ্যে গত ১২ আগস্ট ইংল্যান্ডের বিশাল এলাকায় খরা দেখা দিয়েছে বলে জানান ব্রিটিশ কর্মকর্তারা।

পশ্চিম ইংল্যান্ডের ওরচেস্টারশায়ার-গ্লুচেস্টারশায়ার সীমান্তে ১ হাজার ৫৬৫ হেক্টরজুড়ে একটি খামারের মালিক জেক ফ্রিস্টোন। তিনি জানালেন, এবারের গ্রীষ্মে কঠিন সময় যাচ্ছে।

তার মতে, এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে তেলবীজ জাতীয় ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন চাষের জন্য মাটিতে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা নেই। ফ্রিস্টোনের ৮৫০টি ভেড়া ও ১ হাজার ৪০০টি ভেড়ার বাচ্চার খাবারের ঘাস ফুরিয়ে যাচ্ছে। জমির বিশাল অংশে শালগম লাগাতে পারেননি। তাই আগামী শীতের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে পশুখাদ্যও মজুত করা যায়নি।

দ্য ইকোনোমিস্টের খবরে বলা হয়, আগের গ্রীষ্মগুলোর তুলনায় দেশটির নদীগুলোতে পানির প্রবাহ কমে গেছে। জলাধারগুলোও দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। গত জুনে দেশটির কিছু জায়গায় পানির গড় সঞ্চয় স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ শতাংশ কম ছিল।

বেশিরভাগ অঞ্চলেই মাটির আর্দ্রতা কমপক্ষে ২০১৩ সাল থেকে সর্বনিম্ন।এতে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের বহু কৃষক। কারও কারও মটর, মটরশুটি, লেটুস, পালংশাকের পুরো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষুধার্ত থাকছে গবাদিপশুরাও।

ইংল্যান্ডের কিছু অংশে খরা ঘোষণার পর পানি ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে, যা আরো বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

শুষ্ক আবহাওয়ার প্রভাব কমাতে এরইমধ্যে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন যুক্তরাজ্যের কৃষকরা। বেশিরভাগ কৃষক পাইপলাইনের পানি ব্যবহার করেন। বাকিরা নদী ও কূয়া থেকে পানি নেন। নদী থেকে পানি সংগ্রহের জন্য দেশটিতে সরকারি পরিবেশ সংস্থার কাছ থেকে বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হয়। খরার মুখে সেই অনুমতি হয়তো বাতিল হতে পারে।

জলাধারে পানি সঞ্চয় করে এমন সংকটের ঝুঁকি কমানো যায়। তবে বেসরকারি জলাধার ব্যবহার মোটেও সস্তা নয়। এতে ১০ লাখ ইউরোর বেশি (১২ লাখ মার্কিন ডলার প্রায়) ব্যয় হতে পারে। অবশ্য সরকারি সহায়তার মাধ্যমে সেই চাপ কিছুটা কমানো সম্ভব।

জেক ফ্রিস্টোনের খামারের জলাধারে পানি বিপজ্জনকভাবে কমে যাচ্ছে।

এ ধরনের আরো প্রকল্পকে উৎসাহিত করতে কর মওকুফের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে পানি সংক্রান্ত অবকাঠামোর উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগের দাবি করেছে ন্যাশনাল ফার্মার্স ইউনিয়ন (এনএফইউ)।

যুক্তরাজ্যে গত ৩০ বছরে বড় কোনো সরকারি জলাধার তৈরি হয়নি। সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ পানি পাইপলাইনের ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে যায়।

এনএফইউ বলছে, নতুন পাইপলাইন তৈরি করে সবচেয়ে আর্দ্র অঞ্চল থেকে সবচেয়ে শুষ্ক অঞ্চলে পানি পুনর্বণ্টন করা উচিত ব্রিটিশ সরকারের। সরকার যেন অভাবের সময়ে কৃষকদের পানি সরবরাহকে অগ্রাধিকার দেয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে