সার ও তেলের দাম বৃদ্ধি দুশ্চিন্তায় কৃষক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২২; সময়: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ |
সার ও তেলের দাম বৃদ্ধি দুশ্চিন্তায় কৃষক

মাসুদ রানা, পত্নীতলা : চলতি রোপা আমণ মওসুম শুরতেই বৃদ্ধি পেয়েছে সার ও ডিজেলের মূল্য সার ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে প্রভাব পরেছে কৃষিতেও। চাষাবাদে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ। এতে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা কৃষক।

সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা এবং ডিজেল ৩৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এতে জমি চাষ দিতে খরচ বেশি হচ্ছে। এবার বর্ষা মওসমের শুরুতেই অনাবৃষ্টিতে পত্নীতলার মাঠে মাঠে আমণ রোপণে সেচ দিয়ে চাষাবাদ শুরু হয়। আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবনে দেখা মেলে বৃষ্টির তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত ।

এখনো শেষ হয় নি আমণের রোপন আবার যেসব জমিতে রোপণ করা হয়েছে পানির অভাবে ব্যহত চাষাবাদ , বিদ্যুৎতের লোডশেডিং এর কারনে মটারগুলোতে টাকা দিয়েও মিলছে না সময়মত সেচ । এতে জমিতে শুকিয়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা ধান গাছের কচি চারা, এবস্থায় যদি কয়েক দিন বৃষ্টি না হয় এবং সেচ না দেওয়া যায় তাহলে মরে যাবে অনেক রোপন কৃত কচি চারা গাছ। চাষ করা জমিও শুকিয়ে যাচ্ছে ।

এ অবস্থায় ধান উৎপাদনের খরচ উঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। এদিকে বাজারে এখন চাল, ডাল, তেল, চিনি, ডিম, ভোজ্য তেল পেঁয়াজ সবজি সহ প্রায় সব পণ্যের দাম বেশি।

এদিকে বাজারে পটাশ সারের শঙ্কট বলেও জানান কয়েকজন, কোন কোন সার ব্যবসায়ী সরকারী রেটের চেয়েও বেশী দাম নেওয়ার অভিযোগও আছে। নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে অতিরিক্ত সেচ , সার ও ডিজেলের দাম বাড়ায় প্রতি বিঘাতে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ হাজার থেকে চার হাজার বাড়তি খরচ হচ্ছে ।

বিলম্বে চারা রোপণ করায় ফলন কম হতে পার বলেও কৃষকের ধারনা, এত খরচ করে আমণ আবাদ করে লস হতে পারে জানিয়েছেন অনেকেই। গরু ছাগল বিক্রি করে বউয়ের গহনা বন্ধক, এনজিও ঋন দোকান বাকী করে চাষ করেছেন স্বপ্নের আমণ ধান । জিনিসপত্রের যে দাম তাতে সপ্ন পূরন হওয়া নিয়ে সংশয় তাদের।

শ্রমিকরা জানান বাজারে চাল ডাল তেল সবজি সবকিছুর দাম বেশি তাই মজুরী একটু বেশী দিলে ভাল হয় কেউ দেয় কেউ দেয় না, আমাদের সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। উপজেলার পদ্ম পুকুর গ্রামের কৃষক আপেল মাহমুদ বলেন তিন একর জমিতে এবার আমণ আবাদ করেছেন রোপন শেষ হয়েছে সার ও ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তার খরচ বিঘা প্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বেশী খরচ হয়েছে। পত্নীতলার কৃষক আলম বলেন ৫ বিঘা জমিতে আমণ চাষ করেছেন খরচ অনেক বেশী হচ্ছে এবার লাভ হবে না।

কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষক ইয়ামিন বলেন তিনি বড় মাপের ১৬ বিঘাতে আমণ ধান রোপণ করেছেন সার ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি ও সেচ দিতে আমাদের অনেক খরচ বেড়ে গেছে মনে হয় না খুব বেশি লাভ হবে চাষ করে আর যারা বর্গাচাষী নিশ্চিত তাদের কোন লাভ থাকবে না।

উৎপাদিত পণ্যের বহুমুখীকরণ,পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পের প্রসারণ করতে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য দ্রুত প্রত্যাহার করা, কৃষিখাত ও কৃষককে ভূর্তকী ভূর্তকি , উৎপাদিত ফসলের নায্যমূল নিশ্চিত করতে হবে এমনটাই দাবী করেন এলাকার কৃষক ও সচেতন মহলের অনেকে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন এখনো আমন ধান রোপনের সময় আছে। যদি চারার বয়স ৩০ দিনের বেশি হয় তাহলে ফলন কিছুটা কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ২শ হেঃ অর্জন ১৮ হাজার ৫শ হেঃ আউশ ধান চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৭শ হে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে