জঙ্গল-পরিত্যক্ত ঘর যেন মাদক সেবনের সেইফ হোম

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২২; সময়: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ |
জঙ্গল-পরিত্যক্ত ঘর যেন মাদক সেবনের সেইফ হোম

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় মাদকের ব্যাপক ছড়াছড়ি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে নানা ধরনের মাদকের প্রভাব ভয়াবহ বিস্তার লাভ করেছে।

বিশেষ করে পাটুলী ইউনিয়নের ভাবলা, দাপুনিয়া, সুটুরিয়া, পাটুলীতে এবং নারায়ণপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর যেন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

দেখা গেছে, এসব এলাকার বিভিন্ন জঙ্গল ও পরিত্যক্ত বাড়ি, মাচান, মেশিনঘর ইয়াবা সেবনের সেইফ হোমে পরিণত হয়েছে। এলাকার জঙ্গলগুলোর ভেতরে ছোট ছোট ঘর সদৃশ বসার স্থান তৈরি করা হয়েছে যাতে আরামে বসে মাদক সেবন করা যায়। এসব স্থানে ৫-৭ জনের একেকটি দল বসে ইয়াবা, মাদক গ্রহণ করে থাকে।

বিকেল হলেই বিভিন্ন মোড়ের বাজারগুলোতে মোটরসাইকেল, রিকশা বা অটোরিকশায় আসা যুবকদের ভিড় দেখা যায়। এসব যুবকরা নির্ধারিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ইয়াবা, মদ, গাঁজাসহ নানা ধরনের মাদক সংগ্রহ করে।

প্রায়ই দেখা যায় সিএনজি বা অটোরিকশায় বসেও এসব বেচা-কেনা হয়। তারপর এসব যুবকরা হাওয়া হয়ে যায় এবং নির্ধারিত সেইফ হোমে আরামে সেবন করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভাবলা, চকমখোলা গ্রামের তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দাপুনিয়া প্রাথমিক স্কুল সংলগ্ন জঙ্গল এবং ভাবলা সূত্রধর বাড়ি সংলগ্ন একটি নির্মাণাধীন খামারে দিনেদুপুরেই চলে ইয়াবা সেবন, উচ্চস্বরে বিকৃত ভাষায় বেসামাল আলাপন, গান আর চিৎকার করে। সন্ধ্যা হলে বাড়ে তাদের দাপট।

নারায়ণপুরের সচেতন কয়েকজন শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ী জানান, বাজার ও স্কুল ও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন নির্জন স্থানে তাদের ব্যাপক আড্ডা, ইয়াবা সেবন ও মদপানের দৃশ্য প্রতিদিন চোখে পড়লেও তাদের বাধা দেওয়া কিংবা নিষেধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই।

কারণ, তাদের অনেকেই রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ও সমাজপতিদের সন্তান। একই ভাষ্য পাওয়া যায় বিন্নাবাইদ, সল্লাবাদ, নারায়ণপুর, আমলাব, উজিলাব ও বাজনাব ইউনিয়নের অনেক সচেতন মহলের মুখেও।

অনেকে জানান, ইয়াবা, মদ আর জুয়ার টাকা উপার্জন করতে এরা রাতে চুরি ডাকাতি করছে নিয়মিত। তারা আরো জানান, তাদের অনেকের বাড়ি হতে বিগত কয়েকদিনে মোটরসাইকেল, গরু, ছাগলসহ টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে।

বাজনাব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খন্দকার মোখলেসুর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে ইয়াবা কারবারি, ইয়াবাখোর, জুয়ারি আর মদখোরদের ব্যাপারে আমার অবস্থান সবারই জানা। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে কোনো ছাড় নয়।

এ ব্যাপারে বেলাব থানার ওসি সাফায়েত হোসেন পলাশ বলেন, এসব দমনে আন্তরিকভাবে কাজ করছে বেলাব থানা পুলিশ। বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে কর্মতৎপরতা অব্যাহত আছে। খুব শিগগির এসব এলাকাসহ পুরো উপজেলায় সাড়াশি অভিযান হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে