রাজশাহীতে মাছের বাজারে আগুন, বেড়েছে মুরগি ও সবজির দামও

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২২; সময়: ১:৩৩ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে মাছের বাজারে আগুন, বেড়েছে মুরগি ও সবজির দামও

মিনার আলম আকাশ : এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজশাহীতে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম। সপ্তাহের শেষ দিনে রাজশাহীর মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি মাছে কেজিতে ১০০-১৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের চেয়ে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে মিরকা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা , রুই মাছ ৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, পূর্বের দামের চেয়ে ৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বাটা মাছ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, ৩০০ টাকা কেজিতে বৃদ্ধি পেয়ে চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকা, গত সপ্তাহের চেয়ে ১৫০ টাকা বেড়ে পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা, ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা এবং ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে গুচি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা কেজিতে।

মাছ কিনতে আসা হানিফ জানান, মাছের বাজারে আগুন লেগেছে। প্রতিটি মাছের দাম কেজিতে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছের দাম এতোটা বেশি হলে আমরা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষ হয়তো মাছ কিনে খেতে পারবো না কারণ আমাদের আয় রোজগারতো বাড়েনি।

মাছ বিক্রেতা ফারুক জানান, আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী মাছ সরবরাহ করতে পারছি না। ডিলাররা মাছ দিচ্ছে না এবং আমাদের কাছে থেকে বেশি দাম নিচ্ছে। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্যারিং খরচ বেশি হচ্ছে এ কারনেই বাইরে থেকে মাছ আমদানী কম হচ্ছে এ কারনেই দাম বেশি । এ সপ্তাহে বাজার ঘুরে দেখা যায় মুরগীর বাজারেও একই অবস্থা। ব্রয়লার মুরগী ৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজিতে, গত সপ্তাহের চেয়ে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজিতে, অপরিবর্তিত রয়ে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪২০ টাকা কেজিতে।

মুরগি কিনতে আসা জয়নাল জানান, সবকিছুর দাম যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে আমরা চলবো কি করে। হঠাৎ বাজারে আইসে দেখছি মুরগি কেজিতে ৩০-৪০ টাকা বেশি। মুরগির দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ হয়তো মুরগির মাংশ আর কিনে খেতে পরিব না।

মুরগি বিক্রেতা আসাদ জানান, আমদানি কম থাকার কারণে এ সপ্তাহে মুরগির দামটা বেশি। আর তাছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে ক্যারিং খরচ বেশি লাগছে তাই মুরগির দামটা বেশি। এছাড়াও সাপÍাহিক ছুটির দিনে বাজার ঘুরে দেখা যায় বেড়েছে ডিমের দাম । গত সপ্তাহের চেয়ে হালিতে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে লাল ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা ও ৪২ টাকা হালিতে। ডিম কিনতে আসা করিম মিয়া জানান, ডিমের দাম হালিতে হঠাৎ ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে। একটা ডিমে ২ টাকার বেশি বৃদ্ধি মেনে নেওয়া যায়না। সবকিছুর দাম বাড়ছে এ কারণে ডিম বিক্রেতারা এ সুযোগ নিয়েছে যা মেনে নেওয়ার মতো না।

এদিকে মাছ, মুরগি ও ডিমের সাথে তাল মিলিয়ে বেড়েছে সবজির দাম। ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে,গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে করোলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা , এ সপ্তাহে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেশি, পেয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা , ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে এ সপ্তাহে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়া প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সবজি কিনতে আসা সাইদ জানান, প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে আমরা বাজারে আইসে অবাক হয়ে যাচ্ছি। এভাবে যদি দাম বাড়তে থাকে তাহলে হয়তো আমার মতো নিম্ন আয়ের মানুষ না খেয়ে মরে যাবে কারণ আমার আয় রোজগারতো বাড়েনি তাহলে এতো বেশি দাম দিয়ে কিভাবে সবজি কিনবো।

সবজি বিক্রিতা ফরিদ জানান, আমাদের মালের আমদানি কম এ কারনে প্রতিটি সবজির দাম বেশি। তাছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারনে ক্যারিং খরচ বেশি লাগার কারনেও সবজির দাম বৃদ্ধির কারন বলে মনে করছি।

এছাড়া গরুর মাংশ পরিবর্তিত দামে বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজিতে এবং খাশির মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা কেজি দরে। মুদি দোকান ঘুরে দেখা যায় মুদিপণ্যের দাম স্থিতীশীল রয়েছে ।

মুদি দোকানদাররা জানান, এখন পর্যন্ত তেলের দাম আমরা বাড়াইনি। পূর্বের মূল্যেই আমরা সয়াবিন তেল বিক্রি করছি তবে কয়েকদিনের মধ্যে তেলের দামও বেড়ে যাবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে