মান্দায় বিস্ফোরক মামলার আসামিকে আ.লীগ কর্মী বানানোর অপচেষ্টা

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২২; সময়: ৬:০০ অপরাহ্ণ |
মান্দায় বিস্ফোরক মামলার আসামিকে আ.লীগ কর্মী বানানোর অপচেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁর মান্দায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরন মামলার এহাজারভূক্ত আসামি ছিলেন বিএনপিকর্মী বিদ্যুৎ হোসেন (৪৫)। নির্বাচন চলাকালিন প্রচার-প্রচারণা পোস্টারে আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিকের ছবি বিকৃতি করায় নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছিলেন তিনি।

সেই বিএনপিকর্মী বিদ্যুৎ হোসেনকে আওয়ামীলীগকর্মী বানানোর অভিযোগ উঠেছে একটি মহলের বিরুদ্ধে। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

বিএনপিকর্মী বিদ্যুৎ হোসেন উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পানিয়াল গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে। নিজেকে আওয়ামী লীগ কর্মী দাবি করে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামায়াতনেতা মখলেছুর রহমান কামরুলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করায় আলোচনায় আসেন তিনি।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আ.লীগকর্মী ছফিউল ইসলাম মান্দা থানায় মামলা করেন। এ মামলার ২৪ নম্বর এজাহারভূক্ত আসামি ছিলেন পানিয়াল গ্রামের বিদ্যুৎ হোসেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন আছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ১০ জুলাই সন্ধ্যালগ্নে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে এনে চেয়ারম্যান কামরুল ও তাঁর সহযোগীরা রড দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিদ্যুৎ হোসেন। এ অভিযোগে নওগাঁ আদালতে চেয়ারম্যান কামরুলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। মামলায় বিদ্যুৎ হোসেন নিজেকে আওয়ামীলীগ কর্মী পরিচয়ে আইনি সুবিধা লাভের অপচেষ্টা করেন।

তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিল বলেন, বিদ্যুৎ হোসেন বিএনপিকর্মী হিসেবে এলাকায় চিহ্নিত। তিনি কোনো দিনই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত। নিয়মিত মাদক সেবনেরও অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

মামলায় সুবিধা লাভের আশায় এলাকার কতিপয় ব্যক্তি তাঁকে আওয়ামীলীগের কর্মী বানানোর অপচেষ্টা করছেন। তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি গাজীবুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ হোসেন আওয়ামীলীগের কর্মী নয়, সমর্থক। দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না নিলেও নৌকায় ভোট দেন। বিদ্যুৎ আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর মামলার এজাহারভূক্ত আসামি এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার জানা নেই।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান কামরুলের নির্দেশে পরিষদে ধরে এনে রড দিয়ে পিটিয়ে আমার হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান কামরুলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় হয়রানী করতে আমাকে আসামি করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মখলেছুর রহমান কামরুল বলেন, ঘটনার দিন বিদ্যুৎ হোসেন মদ্যপ অবস্থায় লোকজনকে গালিগালাজ করছিলেন। তাই গ্রামপুলিশ দিয়ে তাঁকে পরিষদে ডেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমাকে দেখে দৌড়ে পালানোর সময় পরিষদের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যান। এতে তিনি হাতে আঘাত পেয়ে থাকতে পারেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে