বিভিন্ন সংকট সমাধানে বেগম ফজিলাতুন্নেছা শেখ মুজিবকে প্রেরণা জুগিয়েছেন

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২২; সময়: ৪:০৩ অপরাহ্ণ |
খবর > জাতীয়
বিভিন্ন সংকট সমাধানে বেগম ফজিলাতুন্নেছা শেখ মুজিবকে প্রেরণা জুগিয়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এবং নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. আবদুল খালেক বলেছেন, শেখ মুজিবের সামনে যখনই বড়রকমের জাতীয় সংকট এসেছে তখনই বেগম মুজিব তাঁকে প্রেরণা জুগিয়েছেন।

যেমন- ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান যখন ঘটে যায়, প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান শেখ মুজিবকে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে আলোচনা করিবার সুযোগ দিয়েছিলেন। এই খবর শুনে বেগম মুজিব অত্যন্ত বিজলিত বোধ করেন। পরে বেগম মুজিব শেখ মুজিবকে জানিয়ে দেন তিনি যেন প্যারোলে মুক্তি হতে সম্মতি না দেন। এর ফলে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব শেখ মুজিবকে শেষপর্যন্ত নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

গত শনিবার (০৬ আগস্ট) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটি’র আয়োজনে ‘প্রেরণা দায়েনী মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ স্মরণে শিল্পকর্ম প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর খালেক এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা বলে থাকি শেখ মুজিবের জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। এর সাথে আমি আরেকটি কথা যোগ করতে চাই, ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্ম না হলে এবং পরবর্তীতে তিনি শেখ মুজিবের সহধর্মীনি না হলে শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু তথা জাতির পিতা হতে পারতেন কিনা এমন প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণের পূর্বে সভায় কি বলতে হবে, তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীবৃন্দ শেখ মুজিবকে নানারকমের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই মুহূর্তে বেগম মুজিব তাঁকে স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, আপনি দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন, সাধারণ মানুষের মনের কথা আপনার অজানা নয়। আপনার বিবেক যা বলতে চায়, সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার কথাই আপনি বলুন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু তাঁর আত্মজীবনী লিখতে চান নি।

তিনি মনে করতেন এ কাজ তাঁর দ্বারা হবে না। এই পর্যায়ে বেগম মুজিব অতি গোপনে খাতা কলম জেলখানায় পাঠিয়ে দিয়ে আত্মজীবনী লেখার জন্য শেখ মুজিবের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে’ এ ঘটনা তিনি নিজেই উল্লেখ করেছেন। কাজেই বলা যায়, রাজনীতিবিদ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর উচ্চতা, লেখক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর এতো জনপ্রিয়তা এইসব কিছুই বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদান। এই মহিয়ষী নারী কাজে নয় ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সত্যিকার অর্থে একজন প্রেরণাদায়েনী মা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে জীবনের বেশিরভাগ সময় দেশের মানুষের অধিকার আদায় করতে গিয়ে জেলখানায় কাটাতে হয়েছে।

সেই সময় বেগম ফজিলাতুন্নেছা সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে সামনের দিকে এগিয়ে গেছেন। কখনও তিনি কারো কাছে মাথানত করেন নি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বেগম মুজিব শেখ মুজিবের পাশে থেকেছেন। নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেশ এবং জাতির জন্য সত্যিকার অর্থে প্রেরণাদায়েনী হিসেবে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামছুন্নাহার নাহার চাঁপা। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী হাশেম খান। এছাড়া অনুষ্ঠানে শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটি ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং চিত্রশিল্পী উপস্থিত ছিলেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে