নামের আগে ডাক্তার, পঞ্চম শ্রেণি পাস, নিয়মিত দেখছেন রোগী

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২২; সময়: ১২:৪৮ অপরাহ্ণ |
নামের আগে ডাক্তার, পঞ্চম শ্রেণি পাস, নিয়মিত দেখছেন রোগী

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। তবে নামের আগে লেখেন ডাক্তার। নিয়মিত রোগীরও দেখছেন। প্রেসক্রিপশনে লিখে দিচ্ছেন ওষুধ। আবার সেই ওষুধ কিনতে হবে তারই নিজ দোকান থেকে। এভাবেই প্রতিনিয়ত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেহন বাজারের নুরুজ্জামান বাবুল (ডা. বাবুল)।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দেহন বাজারে ওষুধের দোকানের সঙ্গে ডাক্তারের চেম্বারের সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ডে লেখা, ডাক্তার নুরুজ্জামান বাবুল, ডিএমএফ ঢাকা, শিশু ও মেডিসিন চিকিৎসক। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ও বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পযর্ন্ত রোগী দেখা হয় বলে চলছে মাইকিং। তবে এই ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

বাবুলের কাছে চিকিৎসা নেওয়া ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার জ্বর হয়েছিল। আমি তার কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তিনি আমাকে কিছু হাই অ্যান্টবায়োটিক ওষুধ দেন। তবে আমার এক পরিচিত বড় ভাই ওষুধগুলো দেখেই খেতে মানা করেন এবং আমাকে অন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। সেই ডাক্তারের দেওয়া প্যারাসিটামল খেয়ে আমি সুস্থ হই।

আরেক ভুক্তভোগী রাবেয়া খাতুন বলেন, আমি মাথা ব্যথার কথা জানিয়ে তার কাছে ওষুধের পরামর্শ চাই। তিনি অনেকগুলা ওষুধ লিখে দেয়। তবে সুস্থতার বদলে আমি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে শহরের এক মেডিসিন ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। সেই ডাক্তার আগের ওষুধ ভুল ছিল বলে জানায়।

এলাকার ব্যবসায়ী আলতাফুর বলেন, বাবুল আমাদের সামনেই বড় হয়েছে। আমরা জানি ও প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পার হয়নি। তাই আমরা তার কাছে চিকিৎসা নিই না। তবে অনেকে অজান্তে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে। চিকিৎসার মতো এ রকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাবধান থাকা উচিত। দ্রুতই এই ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপদ হতে পারে।

এ বিষয়ে কথা হয় বাবুলের সঙ্গে। ডাক্তারি পড়ালেখা বা প্রশিক্ষণের কাগজ দেখতে চাইলে নেই বলে অকপটে স্বীকার করেন তিনি। সেইসঙ্গে চেম্বারের পাশে থাকা ওষুধের দোকানের লাইসেন্সও নেই বলে স্বীকার করেন তিনি। তিনি বলেন, যেখানে ব্যানার করছি সেখান থেকে ভুল করে ডা. লিখে ফেলছে আর মেডিসিন চিকিৎসক লিখছে। আর এই এলাকার আশপাশে কোনো ডাক্তার নেই। তাই আমি যা চিকিৎসা দিচ্ছি, তাতে মানুষের উপকার হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনো সমঝোতার সুযোগ নেই। বিষয়টি জানা ছিল না। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে