ত্যালের যে দাম, ভাবতেছি বাইক বিক্রি কইরা সাইকেল কিনমু

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২২; সময়: ১:২৫ অপরাহ্ণ |
ত্যালের যে দাম, ভাবতেছি বাইক বিক্রি কইরা সাইকেল কিনমু

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ : আন্তজার্তিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামের সাথে সামঞ্জস্যতা রাখতে শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে সারা দেশের ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল, অকটেনসহ প্রতিটি জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারই প্রভাব পড়েছে দেশের প্রায় প্রতিটি তেলের পাম্পগুলোতে। এদিকে ঘোষনা দেওয়ার পর থেকে নওগাঁর প্রায় অধিকাংশ জ্বালানি তেলের পাম্প গুলো রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখেন পাম্প মালিকগুলো। অনেক ক্রেতা প্রয়োজনীয় তেল নিতে এসে পাম্প বন্ধ থাকায় ফিরে যেতে হয় বলে অভিযোগ করেন।

এদিকে শনিবার ( ৬ অগাস্ট ) সকালে শহরের মুক্তির মোড় শাকিব ফিলিং স্টেশনে সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, তেল নিতে আসা অধিকাংশ ক্রেতা মূল্য বৃদ্ধিতে পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে যারা বে-সরকারী কোম্পানিতে চাকুরী করে তাদের প্রতিদিন মোটরবাইক নিয়ে এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত ছোটাছুটি করতে হয়। হঠাত তেলের দাম বেশি হওয়ায় তেল নিতে এসে প্রয়োজনের তুলনায় কম নিতে হচ্ছে তাদের। এতে করে নানান অসুন্তষ্টি প্রকাশ করেন তাঁরা । এছাড়া নিয়ম বহির্ভুত পাম্প থেকে বোতলে এবং ছোট কন্টিনিয়ারে জ্বালানি তেল বিক্রি করতে দেখা যায় পাম্পটিতে।

সকালে তেল কিনতে আসা বে- সরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করা রেজাউল ইসলাম জানান- গতকালও পেট্রোল নিয়েছি ৮৬ টাকা লিটার এবং অকটেন নিয়েছি ৮৯ টাকা লিটার। আজ সেই পেট্রোল কিনতে হলো ১৩০ টাকা লিটার এবং অকটেন ১৩৫ টাকা লিটারে। প্রতিদিন আমার অফিস ও ব্যক্তিগত কাজে পেট্রোল ও অকটেন মিলে প্রায় ৩-৪ লিটার জ্বালানি তেলের প্রয়োজন হয়।

এখন হঠাত করে এতো দাম বেড়ে যাওয়ায় ভেবে উঠতে পারছিনা কি করবো। তেল, গ্যাস সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু আমাদের চাকুরীর বেতন বাড়ছে না। এমনিতেই এতো মূল্য বৃদ্ধির মধ্যে পরিবার নিয়ে সংসার সমলাতে হিমশিম অবস্থা তার উপর এই বাড়তি খরচ বেড়ে গেলো। তাই ভাবতেছি বাইক বিক্রি কইরা সাইকেল কিনমু।

তিনি জানান- কে কখন দেশ ছেঁড়ে পালাবে। একজন ক্ষমতায় থাকবে আর একজন তার পেছনে লাগবে। এসব আমরা সাধারণ জনগণ তার স্বীকার হতে চাইনা। আমরা এই দেশে থেকে যেন সুষ্ঠ সুন্দরভাবে যেন জীবন যাপন করতে পারি তারই প্রত্যাশ করি সরকারের কাছে।

এদিকে তেল নিতে আসা বাংলালিংক কোম্পানিতে চাকুরি করা আরিফ জানান- বাইক আর চালামু না ভাই । একটা ঠরঠরি সাইকেল কিনা চালামু। জীবীকার তাগিদে প্রতিদিন বাইক নিয়ে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে হয় আমাদের। এখন এমন পরিস্থিতে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

আগে যে সংসার মাসে ৬হাজার টাকা দিয়ে চালাতেন এখন তা বেড়ে ৯ হাজারে ঠেকেছে। আর যদি বর্তমান তেলের বাজারে মোটরসাইকেল চালানো হয় তাহলে সংসার আর চলবে না বাইকে তেল তুলেই সারা মাসের ইনকাম শেষ হয়ে যাবে বলে আফসোস করে বলে তিনি।

এদিকে শাকিব ফিলিং স্টেশনের স্বত্যাধিকারী শামসুল হক জানান- সরকারী নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে ডিজেল ১১৪টাকা ৬৫ পয়সা, পেট্রোল ১৩০ টাকা ৬৫ পয়সা এবং অকটেন ১৩৫ টাকা ৬৫ পয়সা দামে তাঁরা বিক্রি করছেন।

তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সকাল থেকে পুর্বে যে তেল নেওয়ার চাপ ছিলো বর্তমানে আজ সকাল থেকে তা কিছুটা কম বলে জানান তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে