ঋণের চাপে যুবকের গলাকেটে আত্নহত্যা

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২২; সময়: ২:৩৯ অপরাহ্ণ |
ঋণের চাপে যুবকের গলাকেটে আত্নহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম : নাটোরের বড়াইগ্রামে ঋণের চাপে নিজেই নিজের গলাকেটে ও হারপিক পান করে শরীফুল ইসলাম সোহেল (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ী যুবক আত্নহত্যা করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর নতুনবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোহেল নতুনবাজার এলাকার গাজী আহমুদুল্লার একমাত্র ছেলে। তিনি বনপাড়া বাজারে মোবাইল ফোনের ব্যবসা করতেন।

বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সিদ্দিক পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, সকাল ১০টার দিকে সোহেলের মা টিউবয়েল থেকে পানি নিতে বের হয় এবং বাবা বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। এসময় সোহেল নিজ বাড়ির দোতলায় মায়ের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে তার মা বাহির থেকে গোঙানোর শব্দ শুনে প্রতিবেধীদের ডাকেন। প্রতিবেশিরা এসে দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করেন।

এসময় দেখা যায় সোহেল মেঝেতে পড়ে গোঙাচ্ছেন, বিছানার উপর বাড়িতে ব্যবহুত বঠি এবং পাশে একটি হারপিকের বোতল পড়ে আছে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থাণীয় আমিনা হাসপাতাল পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সোহেলের মৃত্যু হয়।

তিনি আরো জানান, সোহেল একই বাড়িতে থাকলেও বাবার সাথে পৃথক ভাবে সংসার চালাতেন। একসময় পারিবারিক কলহের জের ধরে নিজবাড়ি ছেড়ে পাশ^বর্তী মোবারকের বাসায় ভাড়াও উঠেছিলেন। গত ১৫দিন আগে পুনরায় নিজবাড়িতে ফিরে আসেন।

সোহেলের বাবা গাজী আহমদুল্লাহ বলেন, আমার এক ছেলে তিন মেয়ে। তিন মেয়েকেই বিয়ে দিয়েছি। ছেলেও বিয়ে করেছেন। তার সংসারে দুই ছেলে এক মেয়ে। তার মোবাইলের ব্যবসা আর আমার হারবাল ওষুধের দোকান। সে পৃথক হয়ে সংসার চালাতো। মাঝে রাগারাগি করে ভাড়া বাসায় উঠেছিল। আবার নিজ বাড়িতে ফিরে এসে আমাকে জানায় তার ৩০ লাখ টাকা ঋণ হয়েগেছে। ঋণ পরিশোধের জন্য পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছে। খুব চাপ দিচ্ছে, মনে হচ্ছে আত্নহত্যা করি বলেও জানায়।

পরে আমি তাকে শান্তনা দিয়ে বলেছিলাম আমি দেখছি। সেই মোতাবেক মেয়েদের ডেকে বলেছিলাম একটু জমি বিক্রি করে সোহেলের ঋণ শোধ করি। সবাই রাজিও হয়েছে। এরমধ্যেই সে আমাদেরকে কাঁদিয়ে এভাবে নিজেই নিজের গলা কেটে আত্নহত্যা করলো। এ কষ্ট মেনে নেওয়া কঠিন।

বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন বলেন, সোহেল অনেক সুন্দর বিনয়ী ছেলে ছিলেন। তার মনে কষ্ট আছে দেখে বোঝা যায়নি। ঠিক কেন এমন হলো বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সোহেলের বড়ছেলে ৭ম শ্রেনিতে, পরেরটা ৫ম শ্রেণিতে এবং ৩ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। সকলের সহযোগিতায় তাদেরকে সুন্দরভাবে বাঁচতে সহায়তা করা হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আপত দৃষ্টিতে আত্নহত্যা বলে মনে হচ্ছে। তবু সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটকে ডাকা হয়েছে। তারা ব্যবহুত বঠি ও অন্যান্য আলাম সংগ্রহ পূর্বক রিপোর্ট দেবেন। এছাড়া লাশের ময়না তদন্ত চলছে সেটাও হাতে পেলে মন্তব্য করা যাবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে