এক ছবি এঁকে ফারহান পাচ্ছেন লাখ টাকা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২২; সময়: ২:০৮ অপরাহ্ণ |
এক ছবি এঁকে ফারহান পাচ্ছেন লাখ টাকা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বাক ও শ্রবণশক্তি নেই ফারহান খানের (১৯)। তবে দারুণ মেধাবী তিনি। ইশারাতেই বুঝতে পারেন, কী বলা হচ্ছে তাকে। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতে ভালোবাসেন ফারহান। তার সবকিছুর সহযোগী মা রেক্সোনা আক্তার।

সম্প্রতি মা-ছেলের দীর্ঘ কষ্টের স্বীকৃতি মিলেছে। ফারহানের আঁকা একটি ছবি ছাপা হয়েছে বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ এবং পবিত্র ঈদুল ফিতর-২০২২ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা কার্ডে।

এই ছবির সম্মানি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এক লাখ টাকা প্রদান করা হবে ফারহানকে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার আফরোজা বিনতে মনসুর গাজী লিপি স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই সম্মানির কথা জানানো হয়েছে।

বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ফারহান খান বাগেরহাট শহরের কেবিবাজার এলাকার মোশারেফ খান ও রেক্সোনা আক্তারের ছোট ছেলে। জন্মের কিছুদিন পরেই ছেলের সমস্যা বুঝতে পারেন বাবা-মা। বিভিন্নভাবে চিকিৎসা করালেও সুস্থ হয়নি ফারহান। কিন্তু এই ছেলেকে নিয়েই বেশি স্বপ্ন দেখতে শুরু করে তার পরিবার।

সাত বছর বয়সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় তাকে। দুই বছর পড়ার পরে বাগেরহাট বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় তাকে। বাক এবং শ্রবণশক্তি না থাকার পাশাপাশি শারীরিকভাবেও কিছুটা দুর্বল ফারহান। তাই সব সময় ছেলের সঙ্গে থাকেন মা রেক্সোনা। স্বপ্ন দেখেন সরকারি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে চিত্রাঙ্কন শিখবে ফারহান।

ইশারায় ফারহান জানান, ছবি আঁকতে তার খুব ভালো লাগে। তিনি বড় হয়ে চিত্রকর হতে চান। বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান। কাজ করতে চান তার মতো যারা দুর্বল তাদের নিয়ে।

ফারহানের মা রেক্সোনা আক্তার বলেন, আমার ছেলে জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। তারপরও ওকে নিয়েই আমার সব স্বপ্ন। ছোটবেলা থেকে ও ছবি আঁকত। মাটি ও চক দিয়ে ছবি একে অনেক দেওয়াল নষ্ট করেছে সে।

তারপরও আমি তাকে উৎসাহ দিয়েছি। ফারহান স্কুল, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায়ও অনেক পুরস্কার পেয়েছে। সহযোগিতা পেলে ছেলেকে চিত্রাঙ্কন শেখানোর খুব ইচ্ছা আমার।

বাগেরহাট বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিনা আশরাফি বলেন, ফারহান অনেক শান্ত এবং ভদ্র ছেলে। শেখার জন্য নিজে নিজে অনেক চেষ্টা করে। ফারহান পুরস্কার পাওয়ায় আমরা সবাই অনেক খুশি হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ছবি পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় আমরা জেলা প্রতিবন্ধী কর্মকর্তার দপ্তরে শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি জমা দেই। সেই ছবি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠান। সেখান থেকে ছবি যাচাই-বাছাই করে শুভেচ্ছা কার্ডে ছাপানো হয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে