রাবি ছাত্রী হত্যায় স্বামী জেলে

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২২; সময়: ১০:৫৫ অপরাহ্ণ |
রাবি ছাত্রী হত্যায় স্বামী জেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রিক্তা আক্তার (২১) নামে এক শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর পূর্বপাড়া এলাকার একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা লিয়াকত আলী জোয়ার্দার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় রিক্তার স্বামী আব্দুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। নগরীর মতিহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত রিক্তা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত ইসতিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইসতিয়াকের সাথে রিক্তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বছর খানেক ধরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর এলাকায়ে একটি বাসা ভাড়া করে একসাথে থাকতেন। গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে সেই বাসা থেকে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায় তার স্বামী। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মতিহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসতে একটু সময় লাগবে। যার কারণে বলা যাচ্ছে না এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ইসতিয়াককে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন নিহতের সহপাঠীরা। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এক প্রতিবাদী সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় তারা ইসতিয়াককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানান। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন আইন বিভাগের সভাপতি হাসিবুল আলম প্রধান।

সমাবেশে মনোবিজ্ঞানের সভাপতি ও মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুবা কেয়া বলেন, ‘আমরা এমন মৃত্যু কোনো মেয়ের চাই না। দেশের প্রতিটি ঘর নারীদের নিরাপদ আশ্রয় হোক। আমাদের এই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটায় সুষ্ঠু তদন্ত হোক। একই সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন এই অধ্যাপক।’

নিহতের বাবা লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমি একজন কৃষক। আমাদের পরিবার থেকে কেউ আগে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসেনি। আমার একমাত্র মেয়ে এখানে এসেছে। তার এমন মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমার মৃত্যু পর্যন্ত হত্যাকারীদের সঙ্গে কোনো আপোস করবো না। আমি মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।’

বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে নিহতের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা নিহতের পরিবারকে আইনি সহায়তা প্রদান করব যেন দ্রুত এ ঘটনার তদন্ত হয়। আর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর আমরা অভিযুক্তকে বহিষ্কার করব। এসময় তিনি নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে