আগুনে পুড়ে ঘুমন্ত স্ত্রীর মৃত্যু, খোঁজ মিলছেনা স্বামীর

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২২; সময়: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ |
আগুনে পুড়ে ঘুমন্ত স্ত্রীর মৃত্যু, খোঁজ মিলছেনা স্বামীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, আদমদীঘি : বগুড়ার আদমদীঘিতে আগুনে পুড়ে ঘুমন্ত অবস্থায় শামীমা বেগম (৪৫) নামের এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ওই রাতে নিহত নারীর স্বামী আজাদুর রহমান ঘরে থাকলেও তার খোঁজ মিলছেনা। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের বশিপুর গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় টিনের দুইটি ঘর ও আসবাবপত্র পুড়ে প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার শাঁওইল বাজারে আগুনে ১৩টি সুতার দোকান পুড়ে ৪৫ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

জানাগেছে, গত ৬ বছর আগে উপজেলার সান্তাহার পৌর এলাকার বশিপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আজাদুর রহমান জমি কিনে ২টি টিনের ঘর নির্মাণ করে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। তাদের ছেলে মেয়ে বিয়ে করে তাদের শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। বশিপুর গ্রামের ওই বাড়িতে শুধু তারা স্বামী-স্ত্রী বসবাস করতেন। হঠাৎ ভোর রাত ৩টার পর আজাদুরের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানিয়রা ঘটনাটি দেখতে পেয়ে নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ৪৫ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ততক্ষনে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা গৃহবধূ শামীমা বেগমের পুড়ে নিহত হন। এছাড়া টিনের দুইটি ঘর ও আসবাবপত্র পুড়ে প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে সান্তাহার ফাঁড়ি ও আদমদীঘি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুনে পোড়া শামীমা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে। কিন্তু তার স্বামী আজাদুরের মরদেহ পাওয়া যায়নি এবং তার কোন সন্ধানও পাচ্ছে না পুলিশ।

আজাদুরের ছেলে রাকিব হোসেন জানান, বুধবার রাত ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে তার মা শামীমার সঙ্গে কথা হয়। সে সময় তার বাবা ঘুমিয়ে ছিলেন।

নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শফিউল ইসলাম, মশার কয়েল থেকে আগুন লাগতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তারপরও বিষয়টি আরো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার শাঁওইল বাজারের রায়হান শেখের সুতা মার্কেটে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৩টি দোকান ভস্মিভূত হয়েছে। এতে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, মুহূর্তেই ১২-১২টি সুতার দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বাজার কমিটির সভাপতি আতোয়ার শেখ বলেন, অগ্নিকাণ্ডে মার্কেটের প্রায় ৪০-৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। আজাদুরের ছেলের ভাষ্য অনুযায়ী তার বাবা ঘরেই ঘুমিয়ে ছিলেন। কিন্তু তার মরদেহ সেখানে পাওয়া যায়নি।

ঘটনাটির তদন্ত চলছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের ভাষ্য এবং ফায়ার সার্ভিসের ধারণা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে