আমের খোসার যতো গুণ

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২২; সময়: ১২:৪০ অপরাহ্ণ |
আমের খোসার যতো গুণ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : গরমের সময় বাজারে বিভিন্ন রকমের ফল উঠলেও সবার আগে কিন্তু আমের দিকেই চোখ যায়। সব বয়সের মানুষেরই অত্যন্ত পছন্দের ফল আম।

তবে আমের জনপ্রিয়তা কেবলমাত্র স্বাদের দিক থেকে নয়, রয়েছে এর প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতাও। নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর আম। প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন কে এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ এ ফল বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে।

আমের যেমন গুণ তেমনি আমের খোসারও বহু গুণ আছে। সাধারণত আমরা আম খেয়ে খোসা ফেলে দিই, কারণ আমের খোসাও যে কোনো উপকারে আসতে পারে তা আমাদের মাথায়ই আসে না। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক, আমের খোসা স্বাস্থ্যের কী কী উপকার করে –

হার্ট ভালো রাখে

হৃদরোগ থেকে রক্ষা পেতে আমের খোসা দারুণ কার্যকরী একটি ফল। গবেষণা অনুযায়ী, আমের খোসা ক্যারোটিনয়েড এবং ফেনোলিক্সের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ শরীরকে ফ্রি র‍্যাডিক্যাল ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। ফলে স্থূলতা কমায়, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডিসলিপিডেমিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

ওজন কমায়

আমের খোসায় পাওয়া একটি অনন্য ফাইবার হলো পেকটিন। এই পেকটিন ওজন নিয়ন্ত্রণে দারুণ কাজ করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

আমের খোসা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি কতটা কার্যকরী, তা আমরা সকলেই জানি।

ত্বক ও চুলের জন্য ভালো

আমের খোসা, বিশেষ করে পাকা আম ভিটামিন ই-তে পরিপূর্ণ। ত্বক ও চুল ভালো রাখতে এ ভিটামিন খুবই কার্যকর। এটা ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে, ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণ এবং প্রদাহও দূর করে। এছাড়াও, আমের খোসা চুলের বৃদ্ধি এবং স্ক্যাল্প ভালো রাখতে অত্যন্ত সহায়ক।

অন্ত্র ভালো রাখে

আমের খোসা হেলদি ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফলে অন্ত্র এবং পাচনতন্ত্র সুস্থ থাকে। শুকনো আমের খোসায় প্রায় ৪০ শতাংশ ফাইবার থাকে, এটি ফ্রেশ আমের খোসার চেয়ে বেশি কার্যকরি।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

আমের খোসায় রয়েছে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্যেও রয়েছে। যা শরীরে গ্লুকোজের মাত্রার আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্ষতি থেকেও বাঁচায়। পাশাপাশি আম শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনে সাহায্য করে, যার ফলে গ্লুকোজের মাত্রাও নিয়ন্ত্রিত হয়।

ক্ষত নিরাময় করে

ভিটামিন-ই ক্ষত নিরাময়ে দারুণ কাজ করে। দ্রুত ক্ষত নিরাময় করে এবং নতুন ত্বক উঠতে সহায়তা করে। আমের খোসা পোড়া ত্বক এবং অস্ত্রোপচারের ক্ষত সারাতেও সাহায্য করে।

কীভাবে খাবেন

নানাভাবেই আমের খোসা খাওয়া যেতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় কোনো রকম প্রক্রিয়াজাত না করে খেলে। এভাবে খেলে সম্পূর্ণ গুণাগুণ অটুট থাকে। তবে কেউ চাইলে রোদে শুকিয়ে, হালকা ভেজে বা তাওয়ায় সেঁকেও খেতে পারেন। আবার কাঁচা আমের আচার বানানোর সময় খোসা না ফেলে সেটিসহই আচার বানাতে পারেন।

সতর্কতা

আমের খোসার নানাবিধ উপকারী দিক থাকলেও এটি গ্রহণের ক্ষেত্রে একটু সতর্ক হতে হবে। অনেক সময় আমকে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য কীটনাশক স্প্রে করা হয়। তাছাড়া অনেক অসাধু ব্যবসায়ী ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করেন। এসব উপাদান আমের খোসায় দীর্ঘদিন থেকে যেতে পারে।

এ ধরনের সমস্যা থেকে বাঁচতে সবচেয়ে সহজ সমাধান হলো জৈবিক উপায়ে উৎপন্ন আম খাওয়া, যেখানে কোনো রকম কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। আর বাজারের আমের খোসা খেলেও তার খোসা ভালোভাবে পানিতে ভিজিয়ে রেখে রাসায়নিক ও জীবাণুমুক্ত করে নেয়া উচিত। এছাড়া আমের খোসায় যদি কারও অ্যালার্জি থাকে, তাহলে তার জন্য এটি এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে