হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২২; সময়: ১:০৭ অপরাহ্ণ |
হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বরগুনা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ঘুরে শেষ পর্যন্ত রাস্তায় সন্তান প্রসব করলেন এক অসহায় নারী।

এ ঘটনায় নবজাতকের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত হলেও প্রসূতি নারীর অবস্থা সংকটাপন্ন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে বরগুনা পৌর শহরের পশু হাসপাতাল সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ওই প্রসূতি নারীর নাম রিমা বেগম (১৯)। তিনি বরগুনার দরিদ্র রিকশাচালক মো. ইব্রাহীমের স্ত্রী।

প্রসূতির স্বজনরা জানায়, মঙ্গলবার সকালে বরগুনা সদর হাসপাতালে এসে ভর্তি হন রীমা। ওইদিনই সন্ধ্যার পর তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। প্রসব বেদনা নিয়ে রাত পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে বসেই কাতরাচ্ছিলেন।

কিছুক্ষণ পরে বরগুনা সদর হাসপাতালে ওই সময়ে দায়িত্বরত ডাক্তার-নার্সরা ওই নারীকে বরগুনা পৌরসভার বটতলা এলাকার আলরাজি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যেতে বলেন। তাৎক্ষণিক দরিদ্র রীমা বেগমকে আল রাজি ক্লিনিকে নিয়ে যায় স্বজনরা।

আলরাজি ক্লিনিকে ডাক্তার না থাকায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে পশু হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত শেফা ক্লিনিকে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু শেফা ক্লিনিকেও ডাক্তার ছিল না। পরে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার সহযোগিতায় রীমাকে অন্য আরেকটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তায় নামানো হয়।

এই রাস্তায়ই একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান প্রসব করেন রীমা। পরে প্রসূতি ও নবজাতককে উদ্ধার করে শেফা ক্লিনিকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। প্রসূতি নারী রীমার অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে তাৎক্ষণিক বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রীমা বেগমের শাশুড়ি বলেন, রীমা প্রসব বেদনায় ছটফট করছিল, এমন সময় হাসপাতাল থেকে জানায় রীমার অবস্থা গুরুতর, হাসপাতালে তার চিকিৎসা হবে না। কোনো ক্লিনিকে গিয়েই ডাক্তার পাইনি।

শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. জান্নাতুল আলম লিমা বলেন, আমি ডিউটি শেষে বাসায় গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ খবর পাই যে পশু হাসপাতাল সড়কে এক নারী সন্তান প্রসব করেছেন এবং তাকে উদ্ধার করে আমাদের এখানে আনা হয়েছে।

তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এসে ওই নারীকে দেখি। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার অবস্থা গুরুতর, তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি। তবে সদ্য প্রসূত নবজাতক সুস্থ আছে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রথমে ওই মহিলা আমাদের হসপিটালে এসেছিল নরমাল ডেলিভারি করার জন্য।

অনেক চেষ্টা করে নরমাল ডেলিভারি না হওয়ায় তারা প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য চলে যায়। পরে কি হইছে আমি তা জানি না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে