৩০০ প্রজাতির আমের উদ্ভাবক তিনি, এক আমের নাম ‘ঐশ্বরিয়া’

প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২২; সময়: ১:৪০ অপরাহ্ণ |
৩০০ প্রজাতির আমের উদ্ভাবক তিনি, এক আমের নাম ‘ঐশ্বরিয়া’

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : প্রত্যেকদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠেন ভারতের উত্তর প্রদেশের মালিহাবাদ এলাকার বাসিন্দা ৮২ বছর বয়সী কলিম উল্লাহ খান। তারপর নামাজ পড়ে মাইলখানেক হেঁটে শতবর্ষী একটি আমগাছের নিচে যান। এই শতবর্ষী আমগাছটি থেকে প্রায় ৩০০ প্রজাতির নতুন আম উদ্ভাবন করেছেন তিনি। প্রতিটি আমই প্রকৃতিতে, আকারে, স্বাদে ও গন্ধে ভিন্ন।

প্রতিদিন সকালে হেঁটে যখন তিনি আম বাগানে যান এবং চশমার ভেতর দিয়ে আম গাছগুলো দেখেন তখন তার চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে। গাছের পাতায় হাত দিয়ে মমতা বোলান আলতো করে এবং গন্ধ শুঁকে দেখেন ফল পেকেছে কি না। খবর এএফপির।

কলিম উল্লাহ বলেন, এটা কয়েক দশক ধরে রোদে পুড়ে আমার কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার। খোলা চোখে দেখলে এটাকে কেবল একটি গাছই মনে হবে। কিন্তু মনের চোখ দিয়ে দেখলে এটা একটা গাছ, একটা বাগান এবং বিশ্বের বৃহত্তম আম কলেজ মনে হবে।

স্কুল থেকে ঝরে পড়া কলিম উল্লাহ তরুণ বয়সেই কলম বা গ্রাফটিং পদ্ধতিতে আমের জাত নিয়ে প্রথম পরীক্ষা করে ভিন্ন জাতের আম উদ্ভাবন করেন। সে সময় তিনি একটি গাছ বড় করে সাত ধরনের নতুন আম উদ্ভাবন করেছিলেন। কিন্তু গাছটি ঝড়ে উপড়ে যায়। এরপর ১৯৮৭ সালে শতবর্ষী একটি আমগাছ থেকে নমুনা নিয়ে আবার পরীক্ষা শুরু করেন তিনি। সেখান থেকে তিনি ৩০০ নতুন প্রজাতির আম উদ্ভাবনে সফল হন। তিনি বলেন, তার উদ্ভাবিত প্রতিটি জাতই স্বাদ, গঠন, রং ও আকারে আলাদা।

শুধু নতুন জাতের আম উদ্ভাবন করেই থামেননি, আমের নামও রাখতেন তিনি। যেমন প্রথমদিকের একটি আমের নাম রাখেন বলিউডের অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের নামে। ১৯৯৪ সালে ঐশ্বরিয়া বিশ্বসুন্দরী খেতাব জেতার পর কলিম উল্লাহ একটি জাতের নাম রাখেন ঐশ্বরিয়া। আর ওই জাতকেই এখন পর্যন্ত তিনি নিজের উদ্ভাবিত আমের মধ্যে ‘সেরা উদ্ভাবন’ মনে করেন।

কলিম উল্লাহ বলেন, এই অভিনেত্রীর মতোই সুন্দর এ জাতের আম। একেকটি আমের ওজন এক কেজির বেশি হয়। খেতে খুব মিষ্টি এই আমের বাইরের ত্বকে লাল রঙের আভা হয়।

এ ছাড়া তার উদ্ভাবিত আমের মধ্যে দুটি আমের নামকরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের নামে। একটি আমের নামকরণ করেছেন আনারকলি। যেটির ভিন্ন ত্বকের দুটি স্তর রয়েছে এবং গন্ধও ভিন্ন।

আট সন্তানের জনক কলিম উল্লাহ বলেন, মানুষের আসা-যাওয়া থাকবে, কিন্তু এই আমগুলো চিরদিন থেকে যাবে। মানুষ যখন শচীন আম খাবে, তখন ক্রিকেটের এই নায়ককে মনে পড়বে।

আম উদ্ভাবনে তার এই দক্ষতার জন্য ব্যাপক প্রশংসাও পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ২০০৮ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান অর্জন একটি। এ ছাড়া তিনি ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমন্ত্রণও পেয়েছেন। তিনি বলেন, মরুভূমিতেও আমি আম জন্মাতে পারি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে