মান্দায় প্রসূতির মৃত্যুর তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ

প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২২; সময়: ৭:৪৯ অপরাহ্ণ |
মান্দায় প্রসূতির মৃত্যুর তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : নওগাঁর মান্দায় ক্লিনিকে অজ্ঞানের ডাক্তার ছাড়াই অপারেশনে প্রসূতি মৃত্যুর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ উঠেছে তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে। ঘটনার বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল কমিটিকে। কিন্তু তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি প্রসূতি মৃত্যুর তদন্ত প্রতিবেদন।

এনিয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান নওগাঁ সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট ডা. সাদিয়া রহমান কোনো কথা বলতে রাজি হননি। জেলা সিভিল সার্জনও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়ার অজুহাত দেখিলে দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফয়সাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল ও ত্রুটিযুক্ত অপারেশনে মাঝেমধ্যেই রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ওইসব ঘটনা টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেন ক্লিনিক মালিক জিয়াউর রহমান জিয়া। এবারও প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা থেকে তাঁকে বাঁচাতে স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাব্যক্তিরা বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানা যায়, গত ২৫ জুন দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার প্রসাদপুর বাজারের ফয়সাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আকলিমা বেগম (৩২) নামে এক নারীর সিজারিয়ান করানো হয়। এটি ছিল তাঁর তৃতীয় সিজারিয়ান। সেই অপারেশনে অজ্ঞানের কোনো ডাক্তার ছিল না।

অপারেশনের পর রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় ক্রমেই অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বিকেল ৫টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় বিভিন্ন দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের পর গত ৩০ জুন জেলা সিভিল সার্জন আবু হেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এ কমিটির প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন নওগাঁ সদর হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ডা. সাদিয়া রহমান। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, নওগাঁর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আলী আকন্দ ও মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার বিজয় কুমার রায়।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির সদস্য ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার রায় বলেন, গত ৭ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে। অপারেশনের সময় সেখানে অজ্ঞানের ডাক্তার ছিল না। এছাড়া অব্যবস্থাপনারও কিছু চিত্র উঠে এসেছে তদন্তে। এর বেশি কিছু বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।

তদন্ত কমিটির প্রধান নওগাঁ সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট ডা. সাদিয়া রহমান এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেন।

জেলা সিভিল সার্জন আবু হেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার বলেন, এখন পর্যন্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন পেলে সেটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। এরপর প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে অধিদপ্তর ব্যবস্থা নেবেন। এ ক্ষেত্রে আমার কিছুই করার নেই।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে