উল্লাপাড়ায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগে মামলা

প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২২; সময়: ১২:২২ অপরাহ্ণ |
উল্লাপাড়ায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ১৪ জুন -২০২২ ইং তারিখে ভুতপূর্ব ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ, স্কুল পরিচালনা পর্ষদ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়োজিত ১১ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ রকিবুল ইসলাম বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদী রকিবুল ইসলামের অভিযোগে জানা গেছে, উল্লাপাড়াস্থ মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল শাখায় ২০০২ সালের ১৫ এপ্রিল তারিখে শিক্ষক নিয়োগের সকল বিধি বিধান অনুসরণ করিয়া মামলার বাদী রকিবুল ইসলামকে সহকারী শিক্ষক ইংরেজি পদে স্কুল পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দেন। অপর দিকে মামলার ১নং বিবাদী আব্দুল মজিদ একই সালের ৮ আগষ্ট তারিখে স্কুল শাখার ধর্মীয় শিক্ষক (কামিল) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

স্কুল পরিচালনা পর্ষদ সরকারি বিধি বিধান মোতাবেক কোন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না করিয়া অত্র মামলার বাদী রকিবুল ইসলাম ও ১নং বিবাদী আব্দুল মজিদ সহ অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে স্কুল পরিচালনা করে আসছিলেন।

তারমধ্যে মামলার ১ নং বিবাদী ধর্মীয় শিক্ষক আব্দুল মজিদ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন সময়ে স্কুলের আর্থিক দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও নারী কেলেঙ্কারীর মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন। শিক্ষকের এমন অসাদাচরণের কারণে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঘৃণা ও ক্ষোপের সৃষ্টি হলে স্কুল পরিচালনা পর্ষদ বিধি মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন।

মামলার বাদী আরো জানান, এই সুচতুর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ বিধি অমান্য করিয়া বেআইনি ভাবে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। জাল ও যোগসাজসী ভাবে স্বাক্ষরবিহীন রেজুলেশন তৈরি করে, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে, দরখাস্ত যাচাই বাছাই না করে, ডিজি’র প্রতিনিধি ছাড়া, নিয়োগ পরীক্ষা বিহীন, প্রার্থী তালিকা (সি,এস) কপি প্রকাশ না করিয়া মনগড়া ভাবে সরকারী বিধি বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গু দেখিয়ে জাল জালিয়াতি করে জাল স্বাক্ষরে রেজুলেশন তৈরীর মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ কতৃক প্রধান শিক্ষক পদে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন অভিযোগে অসৎ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ চাকুরীচ্যুত হলে সেই অবৈধ কাগজপত্র বিভিন্ন দপ্তরে জমা দিয়ে আসছেন।

পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে স্কুল পরিচালনা পর্ষদ সরকারের সকল বিধি বিধান অনুসরণ করে মামলার বাদী অথাৎ (আমাকে) মোঃ রকিবুল ইসলামকে প্রধান শিক্ষক পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেন। নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সুনামের সহিত স্কুল পরিচালনা করে আসছেন।

বরখাস্তকৃত সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ জানান, এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে দায়ের করা মামলাটি আমার পক্ষে রায় প্রদান করায় বিভ্রান্ত সৃষ্টি করতে এমন মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (সিআইডি’র) উপ- পরিদর্শক মঞ্জুরুল রহমান জানান, মামলাটি তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম সামছুল হক জানান, এটা অনেক আগের ঘটনা আমার জানা নেই। এখন পর্যন্ত কোট কতৃক মামলার কোন নির্দেশনাও পাইনি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফীউল্লাহ জানান, নিয়োগ বিধি অমান্য হলে আদালতের রায় অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে