কৃষিতে সোনালি সম্ভাবনা

প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২২; সময়: ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ |
খবর > কৃষি
কৃষিতে সোনালি সম্ভাবনা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর উন্মুক্ত হয়েছে ঝালকাঠির সঙ্গে সড়কপথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের সবকটি বাণিজ্যিক পথ। বিশেষ করে জেলার কৃষি খাতে ঘটতে শুরু করেছে বিপ্লব। স্বপ্নের দ্বার উন্মোচিত হওয়ায় সুফল পাচ্ছেন ঝালকাঠির কৃষকরা। তাদের মুখে এখন হাসির ঝিলিক।

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে বোরো ধানের উৎপাদন হয়েছে ৫১ হাজার ৮২৯.৪৫৮ টন। শীতকালীন সবজি ৮ হাজার ৩৪৬ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৬০.৫ টন উৎপাদন হয়।

২০১৯-২০ অর্থ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জেলায় দক্ষিণাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য অর্থকারী ফল হিসেবে প্রায় ৮শ’হেক্টর জমিতে প্রায় ৯ হাজার টন আমড়া উৎপাদন হয়। পাশাপাশি প্রায় ৯শ’ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ হাজার টন পেয়ারা উৎপাদন হয়।

এছাড়া ১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে ১০ হাজার ৩৫০ টন নারিকেল উৎপাদন হয়। এছাড়া সরিষা ২২২.৭৫ টন, গম ৪৭৮.৫ টন, পাঁচ হাজার ৪ টন ভুট্টা, ১২ হাজার ৮১২ টন ডাল উৎপাদন হয়েছে।

তবে উৎপাদিত এসব সবজি, ধান ও রবি শষ্য স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রির সুযোগ না থাকায় বাধ্য হয়ে পাইকারদের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করতে হতো কৃষকদের। কিন্তু এখন স্বপ্নের দ্বার পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

গাভারামচন্দ্রপুর ইউপির গাভা গ্রামের কৃষক জালাল হোসেন, তেরআনা গ্রামের নূর আলম ও হোসেনপুর এলাকার কৃষক সুজন হাওলাদার জানান, পদ্মাসেতুর কারণে পাইকারদের কাছে সবজির দাম বেশি পাচ্ছেন তারা। কারণ এখন তাদের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাবে।

আগে এ ইউনিয়নের উৎপাদিত কৃষিজাত মালামাল পার্শ্ববর্তি এলাকা ছাপিয়ে বরিশাল পর্যন্ত যেত। এখন তিন ঘণ্টার ব্যবধানে তা ঢাকায় সরবরাহ করে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।

কাঁঠালিয়ার পাটিখালঘাটা ইউপির কৃষক সুমাইয়া রুবি, মাহাতাব উদ্দিন ও আজাদ হোসেন বলেন, আগে আমাদের উপজেলা থেকে শুধু দূরবর্তী রুটের যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতো। এখন সরাসরি ঢাকা থেকে পাইকাররা ট্রাক নিয়ে দিনে দিনে আমুয়া, বরগুনা ও কাঠালিয়া চলে আসবে। যা এতো দিন স্থানীয় বাজারে সামান্য কিছু বিক্রি হয়ে বেশির ভাগ অবিক্রিত থেকে যেত।

কাঁঠালিয়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো.বশির জানান, পদ্মাসেতুর ফলে স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্টের (এসএসিপি) এর মাধ্যমে উৎপাদিত কৃষি পণ্য ঢাকায় বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হবে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে তাদের উৎপাদিত পণ্য সংগ্রহ করে কৃষকদের সমিতির মাধ্যমে ঢাকায় বিক্রি করা হবে।

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, কৃষি এখন বিপ্লবের বিস্ফোরণ ঘটবে। কৃষক ও কৃষির উন্নয়ন তরান্বিত হবে। আগের মতো ফেরীর অপেক্ষায় কৃষি পণ্য নষ্ট ও সময় ক্ষেপণ হবে না। কৃষক নগদ ও ন্যায্যমূল্য তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।

এদিকে, পদ্মাসেতু চালুর ফলে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার বিষখালী নদী তীরে গড়ে উঠা পর্যটন এলাকা ছৈলারচর হতে পারে দর্শনীয় স্পট বলে মনে করেন ডিসি জোহর আলী। তিনি জানান, ঝালকাঠির ব্রান্ড পণ্য শীতলপাটি ও পেয়ারা চাষিদের এতো দিনের স্বপ্ন পূরণের দ্বার উম্মোচন হয়েছে।

ফলে বিশ্বের পর্যটকরা এখন সরাসরি ঢাকা বিমানবন্দরে নেমে ঝালকাঠি এসে ছৈলারচরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারবে ঝালকাঠি পাটিকরদের হাতে তৈরি শীতলপাটি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে