হ‌ুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২২; সময়: ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ |
হ‌ুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : জনপ্রিয় কথাশিল্পী, নাট্যনির্মাতা ও চলচ্চিত্রকার হ‌ুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী মঙ্গলবার (১৯ জুলাই)। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের পর ২০১২ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বাংলা সাহিত্যের বিপুল জনপ্রিয় এই সাহিত্যিকের।

নন্দিত এ কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নুহাশপল্লী ও লেখকের নিজ জেলা নেত্রকোণায় বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

হ‌ুমায়ূন আহমেদের শরীরে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে মারণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে যান। ২০১২ সালের ১৬ জুলাই সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় হ‌ুমায়ূন আহমেদের মরদেহ। ২৪ জুন তাকে দাফন করা হয় তার গড়ে তোলা গাজীপুরের নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।

১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে নজর কাড়েন হ‌ুমায়ূন আহমেদ। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগার’। এটিও বোদ্ধামহলে প্রশংসিত হয়। সেই থেকে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশকের লেখকজীবনে নিজেকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে নিয়ে যান। পাঠককে আবিষ্ট করে রাখার অনন্য কুশলতার কারণে তাঁকে ‘গল্পের জাদুকর’ হিসেবে গণ্য করা হয়। হুমায়ূন আহমেদের লিখিত গল্প-উপন্যাসে মধ্যবিত্তজীবনের সহজ ও হৃদয়গ্রাহী বর্ণনা পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও কয়েকটি উপন্যাস লিখেছেন। লিখেছেন শিশুতোষ রচনা ও বিজ্ঞান কল্পকাহিনি।

হ‌ুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। স্কুলজীবনে হ‌ুমায়ূন আহমেদকে বাবার চাকরিস্থল কুমিল্লা, সিলেট, বগুড়া, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় বাস করতে হয়।

তিনি ১৯৬৭ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (রাজশাহী বিভাগে মেধাতালিকায় দ্বিতীয়), ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবাল তার ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।

হ‌ুমায়ূন আহমেদের ১১৮টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে অন্য প্রকাশ। তার প্রকাশিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে- জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প, মধ্যাহ্ন, কিশোর সমগ্র, হিমুর আছে জল, লীলাবতী, হরতন ইস্কাপন, হিমুর বাবার কথামালা, আজ হিমুর বিয়ে, হিমু রিমান্ডে, মিছির আলীর চশমা, আমিই মিছির আলী, দিঘির জলে কার ছায়া গো, কিছু শৈশব, হ‌ুমায়ূন আহমেদের ভৌতিক অমনানিবাস, আগুনের পরশমণি, পাপ ৭১, শ্রাবণ মেঘের দিন।

তার নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- শংখনীল কারাগার, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা ও শ্যামল ছায়া। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হ‌ুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে