জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখায় দুর্ভোগে চার পরিবার

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২২; সময়: ৯:৩২ অপরাহ্ণ |
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখায় দুর্ভোগে চার পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার কাশিড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে বাসিন্দা সৌদি আরব প্রবাসী আশরাফ প্রামাণিকের বাড়ির মুল ফটকের সামনে বাঁশে বেড়া দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন এক প্রতিবেশী।

একারণে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ওই প্রবাসীর পরিবারসহ চারটি পরিবারের লোকজন চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় এক ভ্যানচালক তাঁর বাড়ি থেকে ভ্যান বের করতে পারছেন না। এতে তাঁর সংসারের আয় রোজগারেও ভাটা পড়েছে। ভুক্তভোগীরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধের দারস্থ হয়ে কোন প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

রোববার সকালে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সৌদি প্রবাসী আশরাফ প্রামাণিকের মাটির বাড়ির মুল ফটকের সামনে বাঁশের বেঁড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ওই ঘেরার ভেতরে গাছগাছালিও রোপন করা হয়েছে। প্রবাসী আশরাফ উদ্দিন প্রামাণিকের বাড়ির মুল ফটকে তালা ঝুলছিল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫০-৬০ বছর ধরে রাস্তাটি দিয় গ্রামের চারটি পরিবারের লোকজন চলাচল করছিল। হঠাৎ করেই গত ৫ জুলাই সকালে সৌদি আরব প্রবাসী আশরাফ প্রামাণিকের প্রতিবেশি মোহাম্মদ আলীর ছেলে আরমান হোসেন, আমিনুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের লোকজনেরা প্রবাসী আশরাফ প্রামাণিকের বাড়ির মুল ফটকে সামনে বাঁশ বেড়া দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়।

এঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রবাসী আশরাফ প্রামাণিকেরর স্ত্রী তহমিনা বেগম (৪৫) ও ছেলে শরীফুল ইসলাম (১৯) মারধরের শিকার হন। এখন তাঁরা হুমকি-ধমকির ভয়ে বাড়িতেও থাকছেন না। প্রবাসী আশরাফ প্রাথমিকের বাড়ির সামনে আব্দুল জলিল, মৃত খলিলের ও কামাল হোসেনের বাড়ি রয়েছে। চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেওয়ায় এই তিনটি বাড়ির লোকজনেরা জমির আইল দিয়ে চলাচল করছে। তবে জমির আইল দিয়ে ভ্যান যাচ্ছে না। একারণে ভ্যানচালক কামাল হোসেন বাড়ির বাহিরে ভ্যান বের করতে পারেননি। একারণে তাঁর সংসারে আয়-রোজগারে ভাটা পড়েছে।

প্রবাসী আশরাফ প্রামাণিকের ছেলে শরীফুল ইসলাম বলেন, যেদিন আমাদের বাড়ির মুল ফটকের সামনে চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিচ্ছিল। তখন আমার মা এসে প্রতিবাদ করে তখন মোহাম্মদ আলীর ছেলেরা আমার মাকে মাটিতে ফেলে মারপিট করে। আমি আমার মাকে রক্ষা করতে গেলে আমাকেও তাঁরা মারপিট করে। এঘটনায় থানায় মামলা করেছিলাম। আসামিরা জামিনে এসে আমাদের প্রাণনাশেে হুমকি দিচ্ছে। আমরা মা-ছেলে ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছি না।

ভ্যানচালক কামাল হোসেন বলেন, বাঁশের বেঁড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ি থেকে ভ্যান বের করতে পারিনি। একারণে সংসারের আয়-রোজগারে ভাটা পড়েছে। জমির আইল চলাচল করতে হচ্ছে।

প্রতিবেশি বৃদ্ধ আশরাফ আলী (৭০) বলেন, আমরা ছোট থেকে দেখছি, এই রাস্তা দিয়ে লোকজন চলাচল করছে। হঠাৎ করেই বাঁশের বেঁড়া দিয়ে রাস্তাটি বন্ধ করা হয়েছে। রাস্তা বন্ধ করা ঠিক হয়নি। আমি দ্রুত বাঁশের বেঁড়া খুলে দিয়ে রাস্তাটি উন্মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।

কাশিড়া গ্রামের বাসিন্দা ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাত নম্বর ওর্য়াডের সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, প্রবাসীর আশরাফ প্রাথমিকের বাড়ির সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। এতে চারটি পরিবারের লোকজন চলাচল করতে পারছেন না। রাস্তা না থাকায় ভ্যানচালক কামাল হোসেন তাঁর ভ্যান বাহিরে বের করতে পারেননি।একারণে তাঁর রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

ঘটনাটি জানার পর আমি ও নারী সদস্য ফজিলাতুন নেছা গ্রাম পুলিশ সঙ্গে নিয়ে রাস্তার বাঁশের বেড়া খুলে দিতে গিয়েছিলাম। অভিযুক্ত আরমান ও আমিনুর আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেছেন।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, রাস্তার বাঁশের বেড়া খুলে দিতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু আমার কথা শোনেনি। এখন রাস্তার বাঁশের বেড়া খুলে দিয়ে নোটিশ করব।

অভিযুক্ত আমিনুর ইসলাম বলেন, আমাদের পৈত্রিক জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়েছি। আমরা কোন রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেইনি। এতে যদি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয় তাহলে আমাদের করার কি আছে?। আমরা বাঁশের বেড়া সরিয়ে নিব না।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে