খাল খননে জেগেছে রবিশস্যের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২২; সময়: ১:০২ অপরাহ্ণ |
খাল খননে জেগেছে রবিশস্যের সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ : নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় তিনটি খাল পুনঃখননে আর্থ সামাজিক উন্নয়নের সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। রবিশস্য, মৎস্যচাষ, হাস পালন, সবজী চাষ সহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন তৈরী হয়েছে প্রায় ১০হাজার উপকারভুগীদের মাঝে। খালের পানি থেকে কৃষিকাজে সেচ ব্যবস্থার কারনে ফসল উৎপাদনে সুবিধা পাচ্ছেন চাষিরা।

তিনটি খালে ১২০০ সদস্য বিশিষ্ট গ্রামীন পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির অধিনে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁ (এলজিইডি) অর্থায়নে ২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৯ কি মি দৈর্ঘ্য খালটি খনন কাজ ইতিমধ্যে সম্পুর্ন হয়েছে। যার উপকারভুগীরা সুফল পেতে শুরু করেছে। এর ফলে রবিশস্যসহ বছরে তিনবার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে।

২০২১-২২ অর্থ বছরে উপজেলার বুড়িগঞ্জ, ইসলামগাথী, মারিয়া, কাশিয়াবাড়ি, চকতেমুখ খাল এর পুন খনন এর কাজ ইতিমধ্যে সম্পুর্ন হয়েছে। খালটি আত্রাই নদীর পড়ে গৌড় নদী থেকে শুরু হয়ে মাঠের মধ্যে দিয়ে নাগর নদীর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। খাল খনন এর পুর্বে বন্যার সময় ভরা নাগর নদীর পানি সরাসরি মাঠের ফসল নিমজ্জিত হয়ে থাকত। এর কারনে বছরে বোরো ধান উৎপাদনেও ব্যঘাত ঘটতো। কিন্তু বর্তমানে খালটি পুন খনন হওয়ায় কৃষকের ভাগ্য ফিরেছে। গৌড় নদী দিয়ে পানি সরাসরি নিস্কাশন হওয়ায় ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা উপকারভোগীরা।

স্থানীয় চাষিরা জানান- পুর্বে জমিতে ধান চাষে ৪শ থেকে ৫শ টাকা সেচ কাজে ব্যয় করতেন চাষিরা। কিন্তু বর্তমানে তা আর করতে হবেনা না । তাই ধান চাষে তাদের খরচও হবে কম। এতে সব থেকে বেশি উপকার পাবেন তারা। কৃষি কাজের সুবিধার পাশাপাশি হাস পালন, মৎস্যচাষ ,সবজ্বি উৎপাদনসহ গ্রামীন আর্থসামাজিক উন্নয়নে খালটি দ্বারা উপকৃত হবেন বলে জানান তারা।

স্থানীয় সংসদ সদাস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল জানান- এই এলাকার বিশেষ ফসল ধান। সবসময় এই অঞ্চলের মানুষ যেন জমি সেচ দিতে পারে মুলত সেই লক্ষ্যেই এই খালটি পুনঃখনন করার কাজ সম্পুর্ন হয়েছে। বিগত দিনে এই অঞ্চলে একটি ফসলও ভালো উৎপাদিত হতো না। খাল খনন এর কারনে আজ থেকে এই অঞ্চলের মানুষ কৃষি উৎপাদনে ব্যপক সফলতা বয়ে আনবে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁ এর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ জানান- আত্রাই নদীর বুড়িগঞ্জ গ্রাম হয়ে পাচুপুর বিহারীপুর, শফিকপুর, বাশবাড়িয়া, গুড়নাই, জগদশ, নৈদিঘি, পতিসর- কাশিয়াবাড়ি, তেতুলিয়া পর্যন্ত এবং বরশাতা গ্রাম হয়ে নন্দীগ্রাম, ইসলামগাথী, খরসতী হয়ে আত্রাই পতিসর রাস্তা পর্যন্ত ইতিমধ্যে খালটি পুনঃখনন কাজ সম্পুর্ন হয়েছে । এর সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন উপকারভুগীরা। তিনটি খাল খননের ফলে মাল্টিডাইমেশন উপকার পাচ্ছেন তারা। তিনটি খাল থেকে প্রায় ১৮৭৬ হেক্টর জমিতে সারা বছর ফসল ফলানোর সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। যার উপকারভুগীর সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার। যারা এবছর অন্যান্য আবাদ এর পাশাপাশি রবিশস্য উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছেন। খালটি পুনঃখনন এর ফলে কৃষি খাতে ব্যপক সফল্য দেখছেন এই কর্মকর্তা।

এই একটি খাল খনন পালটে দিতে পারে আত্রাইবাসীর অর্থসামাজিক জীবন ব্যবস্থা। এর সঠিক রক্ষনাবেক্ষন এবং ব্যবহার নিশ্চিতে করতে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন সংশ্লিষ্টরা এমনটাই মনে করেন উপকারভুগীরা।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে