রাজশাহীতে আসামির সাজা বই পড়া ও গাছ লাগানো

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২২; সময়: ১১:৩৫ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে আসামির সাজা বই পড়া ও গাছ লাগানো

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে একটি মামলার রায়ে আসামিদের সাজা দেয়া হয়েছে বই পড়া ও গাছ লাগানো। রায় অনুযায়ী আসামিদের পড়তে হবে মুক্তিযুদ্ধের ওপরে লেখা দুটি বই, লাগাতে হবে ২০টি গাছ।

এ ছাড়া নারীর সফল অগ্রযাত্রার ওপরে ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রচার, প্রেস কাউন্সিল প্রণীত সাংবাদিকদের আচরণবিধি পড়া এবং লিখিতভাবে ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার শর্ত দিয়ে দুই আসামির এক বছরের জন্য প্রবেশন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় কারাদণ্ডের পরিবর্তে বৃহস্পতিবার দুই আসামিকে এই প্রবেশন পালনের নির্দেশ দেন রাজশাহী সাইবার ট্রাব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান। ওই দুই আসামি হলেন, রেজাউল করিম ও মো. ইকবাল হোসেন। রেজাউল করিম বাংলা টিভির জয়পুরহাট প্রতিনিধি। মামলার আরজিতে আসামি ইকবাল হোসেনের গণমাধ্যমের কোনো পরিচয় দেয়া হয়নি।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের আর্থিক অনিয়ম ও নারী শিক্ষকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ে বাংলা টিভিতে ভিডিওসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনায় ২০২০ সালের ২০ মে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। এর আগে ১৭ মে বাদী স্থানীয় থানায় মামলা করতে গেলে আসামিদের প্রভাবের কারণে পুলিশ মামলা নেয়নি।

আরজিতে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা শ্লীলতাহানির ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবি করে ভুক্তভোগীকে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ ধারায় অপরাধ করেছেন। এ মামলায় সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই প্রবেশন মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, মামলার রায়ে বিচারক প্রবেশনকালীন আসামি দুজনকে জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ ও রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা ‘একাত্তরের চিঠি’ বইটি পড়তে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ১০টি ফলদ ও ১০টি করে বনজ গাছ রোপণ করতে বলা হয়েছে।

শত বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে নারীরা এগিয়ে চলেছেন, সেই সফল অগ্রযাত্রার ওপরে তিনটি ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রচার করতে বলা হয়। আসামিদের প্রেস কাউন্সিল প্রণীত সাংবাদিকদের আচরণবিধি পড়তে হবে। লিখিতভাবে ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

ইসমত আরা আরও বলেন, কোনো একটি শর্ত লঙ্ঘন করলে প্রবেশন আদেশ বাতিল করা যাবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধের জন্য আসামিদের এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

তিন মাস পরপর প্রবেশন কর্মকর্তা প্রবেশনের শর্ত প্রতিপালন ও অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। আসামিদের প্রবেশন সময় সন্তোষজনক হলে এই দণ্ড তাঁদের চাকরিসহ ভবিষ্যৎ জীবনে কোনোরূপ অযোগ্যতা বলে গণ্য হবে না। প্রবেশনকালীন আসামিরা কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়াবেন না বা একই ধরনের অপরাধ করবেন না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে