বাগমারায় আদালতের নির্দেশে প্রণোদনার বিক্রয়কৃত সার কৃষকের মাঝে বন্টন

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২২; সময়: ৬:০৯ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় আদালতের নির্দেশে প্রণোদনার বিক্রয়কৃত সার কৃষকের মাঝে বন্টন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নে নানা নাটকীয়তার পর প্রণোদনার বিক্রয়কৃত সেই সার কৃষকের মাঝে বিতরণের নির্দেশ প্রদান করেছে মহামান্য আদালত।

গত বুধবার এই রায় প্রদান করেন মহামান্য আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝিকরা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কৃষকের মাঝে পণোদনার সেই সার বিতরণ করা হয়েছে।

সম্প্রতি ঝিকরা ইউনিয়নে সরকারি প্রণোদনার সার উত্তোলনের পর গোপনে বিক্রি করে দেয় চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সহ কতিপয় মেম্বার। গোপনে সার বিক্রির ঘটনায় উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ইমতিয়াজ দেওয়ান বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বাগমারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন।

ওই মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছিল উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে। সেই সাথে সার বিক্রিয়ের সাথে সরাসরি জড়িত থাকায় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম, সার ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন ও রুহুল আমিন।

সেই সাথে ওই মামলায় ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত দেখানো হয়। অভিযানের সময় আমজাদ হোসেনকে আটক করা গেলেও পলাতক ছিলেন অন্যরা।

জানা গেছে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পাট অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে উপজেলার ২ হাজার ৪৬০ জন কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে পাট বীজ বিতরণ করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাট চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছিল কৃষকদের।

এর মধ্যে ঝিকরা ইউনিয়নের ২৫০ জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে পাট বীজ। ওই সকল কৃষককে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৬ কেজি ইউরিয়া, ৩ কেজি ডিএপি ও ৩ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে প্রদানের জন্য সার গুলো প্রদান করা হয়। প্রণোদনার সেই সার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের জোগসাজসে বিক্রয় করা হয়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৬ মে ঝিকরা ইউনিয়নের মদাখালী বাজারে আমজাদ হোসেনের দোকানে অভিযান চালিয়ে সরকারি সার বিক্রয় করা অবস্থায় ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেনকে আটক করে পুলিশ। তিনি মেম্বারের নিকট থেকে ৩০ বস্তা সার ক্রয় করেছিলেন বলে জানাগেছে।

সার বিতরণের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে ওই সকল কৃষকের তালিকাও তৈরি করা হয়েছিল। সেই তালিকা মোতাবেক ইউরিয়া ও ডিএপি মিলে ৫০ বস্তা সার পাট মন্ত্রণালয়ের নিকট থেকে উত্তোলন করেছে। পাট গাছ বড় হলেও ঝিকরা ইউনিয়নের কৃষকরা সার পাননি।

কৃষকের সেই প্রণোদনার সার উত্তোলন করে অবৈধ ভাবে দুইজন ব্যবসায়ির কাছে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছেন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও মেম্বার আব্দুর রহিম। বিষয়টি জানাজানি হলে কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল।

এদিকে আটক হওয়া সার ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন পুলিশ। প্রণোদনার সরকারি সার বিক্রির ঘটনায় দুই দোকান সীলগালা করে দেয়া হয়েছিল পুলিশের পক্ষ থেকে।

উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ইমতিয়াজ দেওয়ান বলেন, তালিকা অনুযায়ী ২৫০ জন কৃষকের নামে বরাদ্দকৃত সার বিতরণের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছিল। সরকারি সেই সার বিতরণ না করে বিক্রয় করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগমারা থানার পুলিশ পরিদর্শক তৌহিদুর রহমান বলেন, প্রণোদনার সরকারি সার বিক্রয়ের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ অজ্ঞাত কয়েক জনের নামে মামলা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে ওই সকল সার কৃষকের মাঝে বিতরন করা হচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে