মহাদেবপুরে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারপিট আহত ৩, গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২২; সময়: ৪:৪৫ অপরাহ্ণ |
মহাদেবপুরে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারপিট আহত ৩, গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, মহাদেবপুর : নওগাঁর মহাদেবপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুইজন মহিলাকে গছের সাথে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ও মারপিট করে হাত-পা ভেঙে দেয়ার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের হরেকৃষ্ণপুর (ফরমানপুর) গ্রামে।

প্রতিপক্ষের মারপিটে গুরুতর আহতরা হলেন হরেকৃষ্ণপুর (ফরমানপুর) গ্রামের দেবেন্দ্রনাথের স্ত্রী সরলা রাণী (৫৫), তার ছেলের বউ তাপসী রাণী (২৬) ও মৃত তছির আলীর পুত্র হাতেম আলীকে (৫৫)। হাতেম আলীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় দেবেন্দ্রনাথের পুত্র নারায়ণ চন্দ্র বাদী হয়ে বুধবার রাতেই ১২জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৬/৭ জনকে অজ্ঞাত করে থানায় মামলা দায়ের করেন। থানায় মামলা দায়ের হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওইদিনই ২জন মহিলাসহ ১নং আসামী নুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত নুর ইসলাম, আফরোজা বেগম ও নুরজাহান খাতুনকে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে হরেকৃষ্ণপুর (ফরমানপুর) গ্রামের মৃত রফিজ উদ্দিনের পুত্র নুর ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন, নুর ইসলামের পুত্র একরামুল হোসেন ও মাছুম, একরামুলের স্ত্রী আফরোজা বেগম, আনোয়ার হোসেনের পুত্র সাকিব, নুর ইসলামের স্ত্রী মর্জিনা বেগম, সাদেকের স্ত্রী আবিয়া বেগম, তার পুত্র রাসেল, খোর্দ্দকালনা গ্রামের এরশাদুল হকের স্ত্রী নুরজাহান খাতুন, মৃত রফিজ উদ্দিনের পুত্র এরশাদুল ইসলাম, পত্নীতলা উপজেলার খরাইল গ্রামের মৃত সাদেকের পুত্র আশারুলসহ অজ্ঞাত আরো ৬/৭ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একই গ্রামের দেবেন্দ্রনাথের বসতবাড়িতে হামলা চালায়।

এ সময় তারা সরলা রাণী ও তাপসী রাণীকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে। তাদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশী হাতেম আলী এগিয়ে এলে তাকেও মারপিট করে তার হাত ও পা ভেঙে দেয়। তারা দেবেন্দ্রনাথের ছেলের বউ তাপসী রাণীর পড়নের কাপড় চোপড় টানা হেঁচড়া করে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানী ঘটায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়।

সেখানে সরলা রাণী ও হাতেম আলীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

এ ঘটনায় ওইদিনই অভিযান চালিয়ে মৃত রফিজ উদ্দিনের পুত্র নুর ইসলাম, একরামুলের স্ত্রী আফরোজা বেগম ও এরশাদুল হকের স্ত্রী নুরজাহান খাতুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আজম উদ্দিন মাহমুদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আটককৃতদের বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে