নওগাঁয় পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২২; সময়: ১২:২৫ অপরাহ্ণ |
নওগাঁয় পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ : নওগাঁর অধিকাংশ পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করছেন ইজারাদাররা। পাশাপাশি সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে বিক্রেতার কাছ থেকেও হাসিল নেওয়া হচ্ছে।

রশিদ লেখকের মাধ্যমে হাটের ইজারাদাররা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করছেন। ফলে কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই।

পশুর হাটে হাসিল আদায়ের চেকটিতে লেখা হচ্ছে ৫০০ টাকা কিন্তু ক্রেতা বিক্রেতাদের কাছে থেকে নেওয়া হচ্ছে ৬০০, ৭০০ এমনকি ৮০০ টাকা পর্যন্ত। এমনটিই অভিযোগ হাটে কোরবানীর পশু বিক্রেতা এবং ক্রেতাদের। ইতিমধ্যে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাট গুলোতে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী গরু-মহিষের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা হাসিল নেওয়ার কথা থাকলেও তাঁদের কাছে থেকে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে। নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার গোবরচাপা হাটে উপজেলার পারোলা ইউনিয়নের নয়ন গরু বিক্রির হাসিল রশিদ কাটার সময় দেখেন টাকার পরিমাণ লেখার স্থানে ৫০০ টাকা লিখা কিন্তু তার কাছে থেকে ৬০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

এছাড়া হাটে গরুর ব্যাপারি অভিযোগ করে বলেন, গেলও বছর হাসিল চেক করা হয়েছিলো ৫০০ টাকা যা সরকারি রেট এ বছরও ৫০০ টাকা। কিন্তু ইজারাদার পক্ষ হাসিল চেক নিচ্ছেন ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত। এতে ক্রেতাগণ সমস্যা মনে করছে। তাই অনেকে হাট থেকে কোরবানীর গরু না কিনেই বাড়ি ফিরছেন। এছাড়া হাটে ছাগল ও ভেড়ার হাসিলেও সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য রাখছেন আদায়কারিরা।

এদিকে নওগাঁর সত্বীহাট পশুর হাটে গরু বিক্রি করতে আসা ব্যাপারীরা জানান, হাটে যে গরুগুলো নিয়ে আসছেন সেগুলো লালন পালন করতে অনেক খরচ হয়েছে। সেই অনুপাতে তারা দাম পাচ্ছেননা। একটি গুরু পালনে তাদের ১ লক্ষ ২০ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে কিন্তু হাটে সেই গরুর দাম ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা বলছেন ক্রেতারা। এতে তারা লোকসানের আশঙ্কায় আছেন। তারা জানান গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় খরচও তাদের বেশি গুনতে হয়েছে বলে জানান তারা।

সিলেটে বন্যা ও করোনার শংকায় গত বছরের চেয়ে এ বছর নওগাঁর হাটগুলোতে সিলেট, ঢাকা এবং চট্টগ্রামের ব্যাপারিদের উপস্থিতি কম বলে জানিয়েছেন তারা। গরুর পাশাপাশি ছাগল ও ভেড়া হাটে নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। মাঝারি আকারের ছাগল ও ভেড়ার চাহিদা বেশি। তারা ক্রেতাদের সাথে দামাদামি করে বিক্রি করছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা হাট থেকে পছন্দস্বরুপ কোরবানি পশু কিনে খুশি মনে বাড়ি ফিরতে পারছেন বলে জানান।

এদিকে পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায় বন্ধে প্রশাসনের সচেষ্ট রয়েছে। হাটে হাটে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা যাচ্ছেন। কোনো হাটের ইজারাদার সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করলে তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে। মানুষের ভোগান্তি হয় এ ধরনের কাজ কোনোভাবেই করতে দেওয়া হবে না।

নওগাঁয় এ বছর ছোট বড় ১০৪টি হাটে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার গবাদিপশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী গবাদিপশুর হাট রয়েছে ৩৮টি। জেলায় গতবার কোরবানি হওয়া গবাদিপশুর সংখ্যা অনুযায়ী এবার কোরবানি হতে পারে ২ লাখ ৯৩ হাজার পশু। কোরবানি উপযুক্ত অতিরিক্ত ১ লাখ ৩৯ হাজার গবাদিপশু দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চাহিদা মেটাবে। জেলায় বাণিজ্যিকভাবে গবাদিপশু লালন-পালনকারী খামারের সংখ্যা ২৫ হাজার।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে