বন্ধুর বোনের সঙ্গে প্রেম সন্দেহে হত্যা

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২২; সময়: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ |
বন্ধুর বোনের সঙ্গে প্রেম সন্দেহে হত্যা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ময়মনসিংহের তারাকান্দায় কিশোর রিকশাচালক আবদুস সামাদ (১৪) বন্ধুর বোনের সঙ্গে প্রেম করে এমন সন্দেহে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। চাঞ্চল্যকর হত্যারহস্য উন্মোচন করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তার করা হয়েছে হত্যায় জড়িত দুই ভাইসহ চারজনকে।

আজ বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করার কথা রয়েছে।

পুলিশ জানায়, উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের দাদরা গ্রামের মো. শাহজাহান মিয়ার ছেলে আবদুস সামাদ (১৪)। গত সোমবার বিকেলে খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে রিকশা নিয়ে বের হয়। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও আর বাড়ি ফেরেনি।

পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করলে রাত ১০টার দিকে পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের সড়কে রিকশা পেলেও পাওয়া যায়নি সামাদকে। ওই অবস্থায় রাতেই বিষয়টি পুলিশকে জানায় পরিবারের লোকজন।

নিখোঁজ সামাদের সন্ধানে পরিবার ও এলাকাবাসী স্কুলটির আশপাশে অনুসন্ধান চালালে মঙ্গলবার দুপুরে সেফটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা ভাঙা দেখতে পায়। ঢাকনা সরানোর পর ভেতরে পাওয়া যায় লাশ। খবর পেয়ে তারাকান্দা থানার একদল পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে তারাকান্দা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা মো. শাহজাহান মিয়া।

নিখোঁজের পরদিন লাশ উদ্ধার নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে মাঠে নামে ডিবি। হত্যকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে অভিযান চালিয়ে তারাকান্দা ও ফুলপুর এলাকা থেকে চারজনকে আটক করা হয়।

তারা হলেন- রবিন মিয়া (১৯), রোহান মিয়া (২৪), মোস্তাফিজুর রহমান নাঈম (১৯) ও মো. শাহীনুর ইসলাম (২২)। রবিন ও রোহান দাদরা গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে। নাঈমের বাড়ি হাটপাড়া ও শাহীনুরের বাড়ি পঙ্গুয়াই গ্রামে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশ জানতে পারে, আটক মো. রবিন মিয়া (১৯) নিহত সামাদের ঘনিষ্ট বন্ধু ছিল। বন্ধুত্বের সুবাদে সামাদ রবিনদের বাড়িতে বিভিন্ন সময় যাতায়াত করত।

রবিন ও রোহানের ছোট বোন আকলিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এমন সন্দেহ হয় দুই ভাইয়ের। ওই অবস্থায় নিজেদের বোনকে শাসন করে সামাদের কাছ থেকে দূরে থাকতে বলে। তাতে কাজ না হওয়ায় হত্যার পরিকল্পনা করে।

সোমবার বিকেলে রবিনসহ তিনজন মিলে সামাদের রিকশা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরাঘুরি করে। তা স্থানীয় লোকজনের নজরে পড়ায় বিষয়টি পুলিশের কাছে জানালে এটিকে ক্লু হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করে ডিবি।

সামাদ মোবাইল ফোন ব্যবহার না করায় প্রযুক্তির সহায়তা নিতে পারেনি পুলিশ। বিকেল বেলায় রিকশায় ঘুরাঘুরি করা যুবকদের খুঁজতে গিয়ে ধরা পড়ে সামাদের খুনিরা।

পুলিশ আরও জানায়, বিকেল ও সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর ঘুরাঘুরি শেষে পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে নিয়ে রবিন, রোহান ও রবিনের আরও চার বন্ধুসহ ৬ জন মিলে প্লাস্টিকের রশি ও জালের টুকরা দিয়ে সামাদের গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ সেফটিক ট্যাঙ্কে ফেলে চলে যায়।

ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের ওসি মো. সফিকুর রহমান বলেন, বন্ধুর বোনের সঙ্গে প্রেম করে- এমন সন্দেহে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। আসামিরা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে