মনে কেড়েছে ববির ‘ভোলা রোড’

প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২২; সময়: ১:৫০ অপরাহ্ণ |
মনে কেড়েছে ববির ‘ভোলা রোড’

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : আমার কাছে ‘ভোলা রোড’ বৃষ্টির দিনে স্বর্গের মতো লাগে। শুধু অপূর্ণ ইচ্ছে রয়ে গেছে, হালকা বৃষ্টি বা ঝুম বৃষ্টির পরে ওই রাস্তায় সাইকেল চালানো। সাইকেল পাই তো মানুষ পাই না। আবার যখন কেউ বলে আসো তখন আবার বৃষ্টি হয় না।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) সংলগ্ন নৈস্বর্গিক পটুয়াখালি-ভোলা-বরিশাল মহাসড়ক নিয়ে রোমাঞ্চকর অনুভূতির কথা জানাচ্ছিলেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী নাহার।

সড়কজুড়ে রয়েছে শত শত গাছের সারি। সবুজে ঘেরা এ মহাসড়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। পাশেই রয়েছে নদী। তার তীর ঘেঁষে একেঁবেকেঁ চলে গেছে এ ভোলা বরিশাল মাহাসড়কটি।

শহরের যান্ত্রিক কোলাহলের মধ্যে একটু প্রশান্তি পেতে হেটে যায় অনেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়টির দক্ষিণ দিকের গেট পার হলেই ভোলা-বরিশাল মহাসড়কে চোখ পড়বে প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তা।

এটি গিয়ে মিশেছে ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে, সমগ্র রাস্তাজুড়ে এক সবুজের হাতছানি। মসৃণ পিচঢালা পথের দুপাশে সারি সারি গাছ। ওপরে একে অপরের সঙ্গে মাথা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ছাতার মতো।

মহাসড়কটিতে হাঁটতে হাঁটতে কানে ভেসে আসবে পাখির কিচির মিচির শব্দ। মনে হবে গ্রাম বাংলার কোনো এক মেঠোপথ দিয়ে হাঁটছি। দুপাশে সবুজের সমারোহ সৌন্দর্যের এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

যানজট কোলাহলমুক্ত এ সড়কে শিক্ষার্থীরা মাঝে মাঝেই তাদের অবসাদ ও ক্লান্তি দূর করতে আসেন। কেউ কেউ আবার বিকালে হাঁটেন মহাসড়কের সবুজবৃক্ষের পাতার ছায়ায়।

২০১৭ সালে বরিশাল-ভোলা সড়কে ফুলের সরণি বিনির্মাণের লক্ষ্যে প্রায় তিন হাজার ফুলের গাছ রোপন করা হয়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-ভোলা সড়কের হিরণ পয়েন্ট থেকে চরকাউয়া পয়েন্ট পর্যন্ত ৪.৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে তিন ধরনের ফুলের বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি পালিত হয়।

বরিশালের তৎকালীন ডিসি ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানেরর নেতৃত্বে ৪.৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু ও জারুল বৃক্ষরোপণ করা হয়।

তিন ধরনের বৃক্ষরোপণের মধ্যে দিয়ে সড়কটিকে রঙিন ফুলে আচ্ছাদিত করার লক্ষ্যেই এ অভিযান বলে জানান ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান।

সেসময় বরিশাল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ফুল সরণি বিনির্মাণে ফুলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। পাশাপাশি অংশ নেয় ৯৬টি এনজিও সংস্থা, সিটি কর্পোরেশন ও বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণাযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী নাবিদা ইয়াসমিন ঐশী বরেন, বিকেলে বন্ধুদের আড্ডার একটি অন্যতম জায়গা ভোলা মহাসড়ক। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের মনকে সতেজ ও জ্ঞানকে সুশৃঙ্খল করে।

মহাসড়কটি শ্রমজীবী মানুষের আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করছে, এখানে রয়েছে অসংখ্য টংয়ের চায়ের দোকান। এ সড়কের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে উপভোগ করতে আসা দর্শনার্থী ও পথযাত্রীরা নিজেদের ক্লান্তি দূর করতে চায়ের আড্ডায় বসেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে