ফ্রিজ কেনার আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি

প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২২; সময়: ১২:০১ অপরাহ্ণ |
ফ্রিজ কেনার আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সংসারের অতি প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি পণ্য ফ্রিজ। সারা বছর বিভিন্ন পণ্য কেনা হলেও বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সেই পণ্যের চাহিদা একটু বেশি বেড়ে যায়। সামনে আসছে কোরবানির ঈদ। এই সময়ে ফ্রিজ কেনার ধুম পড়ে যায়। বিভিন্ন ফ্রিজ কোম্পানিগুলোও তাদের পণ্যের ওপর আকর্ষণীয় অফার নিয়ে আসে ক্রেতাদের জন্য।

যেহেতু ঘরের জন্য বারবার ফ্রিজ কেনা হয় না এবং এর জন্য যথেষ্ট অর্থ ব্যয় হয়, তাই পণ্যটি কিনতে হবে বুঝেশুনে। ফ্রিজ কেনার আগেই এর ছোটোখাটো বিষয়গুলো দেখেশুনে নেওয়া উচিত।

জায়গা ও বাজেট

শহরের ফ্ল্যাটগুলো সাধারণত খুব একটা বড় হয় না। আপনার ঘরে কতটুকু জায়গা আছে, সেই অনুযায়ী ফ্রিজ বেছে নিন। জায়গার সঙ্গে বাজেটের ব্যাপারটিও মাথায় রাখুন। আগে থেকে পরিকল্পনা সাজিয়ে রাখলে সীমিত বাজেটে সেরা পণ্য কিনতে পারবেন।

ফ্রস্ট নাকি নন ফ্রস্ট?

ফ্রিজ কেনার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। সহজ ভাষায় ফ্রস্ট ফ্রিজে বরফ জমে আর নন ফ্রস্ট ফ্রিজে বরফ জমে না। ফ্রস্ট ফ্রিজের সুবিধা হলো, বিদ্যুৎ চলে গেলেও বরফ থাকায় ৩/৪ ঘণ্টা খাবার টাটকা থাকে। তবে এই ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে পানিতে চুবিয়ে বরফ গলানোর প্রয়োজন হয়। কিংবা বরফ গলার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ফ্রস্ট ফ্রিজে বিদ্যুৎ বিল কিছুটা কম আসে। তবে ফ্রিজে বরফ জমার কারণে মাসে অন্তত একবার তা পরিষ্কার করতে হয়।

অন্যদিকে, নন ফ্রস্ট ফ্রিজে খাবার রাখলে তাতে বরফ জমে না। তাই ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে দ্রুত রান্না বা ব্যবহার করা যায়। তবে বিদ্যুৎ না থাকলে এই ফ্রিজের খাবার বেশি সময় ভালো থাকে না। অটোমেটিক বরফ গলানোর জন্য কিছু বাড়তি যন্ত্রাংশ থাকায় এই ফ্রিজে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী ফ্রিজটি কিনুন।

ফ্রিজের যে অংশগুলো দেখবেন

কম্প্রেসার: ফ্রিজের প্রাণ বলা হয় কম্প্রেসারকে। ইনভার্টার কম্প্রেসার রয়েছে এমন ফ্রিজ কিনুন। কিছুটা বেশি অর্থ খরচ হলেও এমন ফ্রিজ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয়ে থাকে। ভোল্টেজ উঠানামাজনিত সমস্যাতেও ফ্রিজকে সুরক্ষিত রাখে।

সাধারণত দুই ধরনের কম্প্রেসার দেখা যায়। কপার ও অ্যালুমিনিয়াম। চেষ্টা করবেন কপার কম্প্রেসারযুক্ত ফ্রিজ কিনতে। অ্যালুমিনিয়ামের কয়েলযুক্ত কম্প্রেসার পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। অন্যদিকে কপারের কয়েল হয় টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী।

এনার্জি স্টার রেটিং: ফ্রিজ কেনার সময় খেয়াল করুন এর গায়ে স্টার (*) চিহ্ন আছে কিনা। যত বেশি স্টার থাকবে তত ভালো। এটি হলো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজ চেনার সহজ উপায়। এছাড়া ফ্রিজের গায়ে ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী’ কথাটিও লেখা থাকতে পারে।

বডি এবং দরজা: ফ্রিজের বডি ও দরজা কী দিয়ে তৈরি জেনে নিন। মেটালের বডিতে জং ধরে যায়। চেষ্টা করবেন ফাইবারের তৈরি ফ্রিজ কিনতে।

আর৬০০এ গ্যাস: ফ্রিজের গায়ে আর৬০০এ গ্যাস লেখা আছে কিনা দেখুন। এই গ্যাসটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উন্নত গ্যাস। এটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। ফ্রিজের গায়ে আর১৩৪এ লেখা থাকলে এমন ফ্রিজগুলো না কেনাই ভালো। এই গ্যাসটি অনেক পুরাতন। এটি আপনার বিদ্যুৎ খরচ বাড়িয়ে দিবে।

ওয়ারেন্টি, গ্যারান্টি ও কিস্তির তথ্য জেনে নিন

ফ্রিজ কেনার সময় এর বিভিন্ন অংশ সম্পর্কে যেমন খোঁজখবর নিতে হবে তেমনি এর ওয়ারেন্টি, গ্যারান্টি ও কিস্তির তথ্যও জানতে হবে। ফ্রিজটিতে আপনি কতদিন ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি পাচ্ছেন, কোন কোন যন্ত্রাংশে গ্যারান্টি আর কোন কোন যন্ত্রাংশে কতদিন ওয়ারেন্টি পাবেন সেটা ভালোভাবে জেনে নিন। কিস্তির সুবিধা থাকলে তা সম্পর্কেও জেনে নিন। কতদিনে, কত টাকা করে, কতবারে পরিশোধ করতে হবে, সুদ কত ইত্যাদি জানুন।

দেশের বিভিন্ন শো-রুমে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফ্রিজ পাওয়া যায়। নিজের চাহিদা ও সুবিধা অনুযায়ী ফ্রিজটি বেছে নিন। হুট করে না কিনে, খুঁটিনাটি বিষয়গুলো যাচাই বাচাই করে নিন। এতে কষ্টের টাকায় সেরা ফ্রিজটি কিনতে পারবেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে