পুতিনকে জয়ী হতে দেওয়া হবে না

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২২; সময়: ৩:০৬ অপরাহ্ণ |
পুতিনকে জয়ী হতে দেওয়া হবে না

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনে জয়ী হতে দেওয়া হবে না- এমন অঙ্গীকার করেছেন বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি৭-এর নেতারা। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন মঙ্গলবার প্রভাবশালী নেতারা এই ঘোষণা দেন।

একই সঙ্গে ইউক্রেনে আগ্রাসনের দায়ে রাশিয়াকে চরম রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মূল্য দিতে হবে বলে জানান তাঁরা। সম্মেলন চলাকালেই ইউক্রেনের একটি শপিংমলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোয় হতাহতের ঘটনায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি এ ঘটনার জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করারও ঘোষণা দেন তাঁরা। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।

এ সম্মেলনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে আরও বেশকিছু নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ। এর মধ্যে আছে- দেশটির তেলের দাম কমানো, স্বর্ণ আমদানি নিষিদ্ধ করা ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা। সেইসঙ্গে ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার ব্যাপারেও সম্মত এই ৭ দেশ।

জি৭ সম্মেলন শেষ হতে না হতেই আবারও সামরিক জোট ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে স্পেনের মাদ্রিদে যাচ্ছেন নেতারা। সেখানে তাঁরা জোটভুক্ত দেশগুলোর জন্য আরও বেশি সংখ্যক সেনা সদস্য বাড়ানোর পরিকল্পনা অনুমোদন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, বিশ্বে খাদ্য সংকট সৃষ্টির জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছেন জি৭-এর নেতারা। তাঁরা বলছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট ব্যাপকভাবে তৈরি হচ্ছে। তাঁরা মনে করেন, বিশ্বের প্রায় ৩২ কোটির বেশি মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁঁকিতে ফেলবে এ যুদ্ধ।

বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট মোকাবিলায় আরও ৪৫০ কোটি ডলারের তহবিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ধনী দেশগুলো। সেইসঙ্গে বন্দরের অবরোধ তুলে নেওয়ার পাশাপাশি ইউক্রেনের ফসল উৎপাদন ও রপ্তানি বাধাগ্রস্ত না করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। খাদ্য মজুত না করতেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় ক্রেমেনচুক নগরীর জনাকীর্ণ একটি শপিংমলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৮ জনের প্রাণহানি ও অর্ধশতাধিক মানুষ আহতের ঘটনাকে ইউরোপের ইতিহাসে সবচেয়ে বিদ্বেষপূর্ণ সন্ত্রাসী হামলা বলে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। যদিও এ হামলার লক্ষ্যবস্তু কোনো শপিংমলে নয়, বরং অস্ত্রের ডিপো ছিল বলে দাবি রাশিয়ার।

জনাকীর্ণ এলাকায় মস্কোর এ হামলার পর রাশিয়াকে বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী দেশ বলে উল্লেখ করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, পুরোপুরি উন্মাদ সন্ত্রাসীরাই কেবল এমন হামলা চালাতে পারে, পৃথিবীতে যাদের কোনো স্থান থাকা উচিত নয়। এটি ভুল নয়, বরং হামলাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

জেলেনস্কি বলেছেন, হামলার সময় শপিংমলটিতে প্রায় ১ হাজার মানুষ ছিল। এর মধ্যে অনেকে এখনও নিখোঁজ, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

যদিও রাশিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, মধ্য ইউক্রেনের একটি অস্ত্রের ডিপোতে হামলা করা হয়েছিল, এরপর সেটির বিস্ম্ফোরণ গিয়ে আঘাত করে শপিংমলে।

দেশটির সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ক্রেমেনচুক অটোমোবাইল কারখানার পাশে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুত করা একটি ডিপোতে হামলা করা হয়েছিল। এরপর সেখানে মজুতকৃত গোলাবারুদ বিস্ম্ফোরিত হলে শপিংমলে আগুন লেগে যায়, যেটি তখন বন্ধ ছিল।

এদিকে, এ হামলা নিষ্ঠুর ও ভয়াবহ বলে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন জি৭-এর নেতারা। এ ঘটনায় রাশিয়াকে জবাবদিহি করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁরা।

শপিংমলে হামলা ও হতাহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে জাতিসংঘ। বেসামরিক নাগরিকদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করায় মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকের ডাক দেয় সংস্থাটি। যেখানে ক্রেমেনচুক হামলাকে প্রধান আলোচ্য বিষয় হিসেবে রাখা হয়।

রাশিয়া বলছে, ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করলেই কেবল হামলা বন্ধ হবে। একই সঙ্গে অস্ত্র নামিয়ে রাখতে ইউক্রেনীয় সেনাদের নির্দেশ দিতেও কিয়েভের প্রতি আহ্বান তাদের। ক্রেমলিনের মুখপাত্র ডিমিত্রি পেসকোভ বলেছেন, রাশিয়ার বেঁধে দেওয়া শর্ত পূরণ করতেই হবে ইউক্রেনকে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে