পদ্মা সেতু নিয়ে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২২; সময়: ২:২০ অপরাহ্ণ |
পদ্মা সেতু নিয়ে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ইবি : ‘২৫ জুন’ দিনপঞ্জিকার এই দিনটি বাঙালির বহু প্রতীক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ। দিনটিতে বাংলার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হয়েছে সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প। যেই সময়টির অপেক্ষায় ছিলো সাড়া বাংলার মানুষ।

পদ্মা সেতু এখন আর শুধুই কল্পনা নয়। দৃশ্যমান বাংলার সম্পদ। ২০১৪ সালে দেখা স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে আজ। এই দীর্ঘ সময়ে কত প্রতিকূলতা কত প্রতিন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ। শঙ্কিত হয়েছে বাঙালি, এসব পেড়িয়ে স্বপ্ন পূরণ হবে তো ? কখনো শঙ্কা, কখনো বা হতাশা। আবার দিনশেষে একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়া সেতুর এক একটি স্প্যান আবারো আশার সঞ্চার করেছে বাঙালির বুকে। অবশেষে সব ঘাত-প্রতিঘাত পেড়িয়ে নিজস্ব অর্থায়নে মাথা উচু করে দাড়ালো পদ্মা সেতু। তাইতো সেতুর উদ্বোধন নিয়ে বাংলার মানুষের উচ্ছ্বাস উদ্দীপনার অন্ত নেই। এই আনন্দে উচ্ছাসিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

পদ্মা সেতু নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিহা বুশরা বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের জন্য এক কাল্পনিক বাস্তবতা!এটি আমাদের জন্য বৃহৎ অর্জন। পদ্মা সেতু মুন্সিগঞ্জ,মাদারীপুর, শরিয়তপুর অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের হাজারও ভোগান্তির সমাধান হবে। শুধু তাদের জন্যই নয়। পুরো বিশ্বের কাছে আমাদের দেশকে তুলে ধরার হাতিয়ার সেতুটি।

৬.১৫ কিলোমিটারের এই জীবন্ত স্বপ্ন আবারও প্রমাণ করলো বাংলাদেশ শুধুমাত্র নিজের অর্থায়নেই এগিয়ে যেতে পারে বহুদূর। শুধু প্রয়োজন এদেশের মানুষের একটু শ্রম,ভালোবাসা আর ভরসা। আমার বিশ্বাস, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে উন্নতির দুয়ারে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।

ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী খাইরুল ইসলাম সৌরভ বলেন, অবশেষে শত শত স্বপ্নে রঙিন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। বিষয়টি আমাদের জন্য গর্বের। তবে পদ্মা সেতু নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি বা বাজে মন্তব্য করছে। কিন্তু আমার মতে হাজার দুর্নীতির মাঝেও পদ্মা সেতু তো আমাদেরই অর্জন, আমাদেরই সম্পদ। আর সেটাও হয়েছে আমাদেরই টাকায়। এ কথাতো বিন্দু মাত্র মিথ্যে নয়। তাই আমি মনে করি নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে কথা না বলে গৌরবোজ্জ্বল এই অর্জনে সবার খুশি হওয়া উচিত।

কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রওশন আরা রিপা বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনন্য সংযোজন। এটি দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব করবে। রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগে সময় কম লাগবে।

তাছাড়া সেতুর দু’পাশে গড়ে উঠবে নানা স্থাপনা। যেমনি পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল ও অধিকতর চাঙ্গা করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদী।

আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম রাকা বলেন, নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতুই নয়, এটি আমাদের অনন্য গৌরব, মর্যাদা আর অহংকারের প্রতীক। আমাদের স্বপ্ন পূরণের অনবদ্য উপাখ্যান। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সফলতার সাক্ষী হলো স্বপ্নের পদ্ম সেতু। সেতুটি নির্মাণের মাধ্যমে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেক ধাপ এগিয়ে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নের নতুন দ্বার ‘পদ্মা সেতু’ উন্মোচিত হলো।

ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ রয়েল বলেন,পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে সবার মনে উৎসাহ-উদ্দীপনার শেষ নেই। আর এই সেতু নিয়ে উৎসাহের ঘাটতি থাকবেই বা কেন? যেখানে নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষ করে, নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে এই সেতুর মাধ্যমে। কৃষি, শিল্প, অর্থনীতি, শিক্ষা, বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই এই সেতু অসীম অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহম্মেদ বলেন, বহু প্রতীক্ষিত স্বপ্নের বাস্তব রূপ পদ্মা সেতু। পৃথিবীর অন্যতম খরস্রোতা পদ্মা নদীতে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এত দীর্ঘ ও আধুনিক মানের সেতু নির্মাণ, কথাটা ভাবতেই এক অন্যরকম ভালোলাগা ও গর্ববোধ কাজ করে। বাংলাদেশের জন্য এটি ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ।

পুরো বিশ্ব যেখানে এই সেতুপ্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান ছিল, সেখানে তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে তা নির্মাণ করে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। কারও কাছে মস্তক অবনত না করে আত্মমর্যাদায় মহীয়ান হয়ে এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সত্যই মর্যাদা ও সফলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে