উল্লাপাড়ায় সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ, জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২২; সময়: ৬:২৫ অপরাহ্ণ |
উল্লাপাড়ায় সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ, জনদুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার ফুলজোড় খালের উপরে নির্মাণাধীন সড়ক সেতু বছর খানেক ধরে বন্ধ রয়েছে। এজন্য খাল পাড়াপাড়ে কয়েক গ্রামের মানুষ চড়ম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঠিকাদারের গাফলতি এজন্য দায়ী। তাকে পুনরায় কাজ শুরুর কথা বলা হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের সড়াতৈল-অলিপুর আঞ্চলিক সড়কে সড়াতৈল গ্রামের পাশে ফুলজোড় খালের উপর সড়ক সেতু নির্মানের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২ কোটি ৬৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯১ টাকা বরাদ্দ দেয়। ৫৪ মিটার লম্বা সড়ক সেতুটির নির্মান কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে।

লিটন এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক সেতুর নির্মান কাজ করছে। সেতুটির প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হবার পর হঠাৎ করেই নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এলজিইডির বেধে দেওয়া সময় অনুযায়ী ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এর কাজ শেষ হবার কথা ছিল।

সড়াতৈল মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান তালুকদার এবং বড়হর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্ব^র ওয়ার্র্ড সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, সড়াতৈল-অলিপুর আঞ্চলিক সড়কের মাঝে ফুলজোড় খাল পারাপারে দীর্ঘদিন ধরে দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ।

বর্ষা মৌসুমে নৌকায় এবং গ্রীষ্ম মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয় লোকজনকে। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২০ সালে এই খালের উপর ৫৪ মিটার লম্বা একটি সড়ক সেতু নির্মানের উদ্যোগ নেয়। ওই বছরের অক্টোবর মাসে এখানে সেতু নির্মান কাজ শুরু হয়।

সেতুটির ৬০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর ঠিকাদার আকস্মিকভাবে কাজ বন্ধ করে দেন। এর নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। অথচ প্রায় ৯ মাস আগে সেতু নির্মান কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও আজ পর্যন্তও এটির কাজ আর নতুন করে শুরু হয়নি। সেতুটির একপাশের সবগুলো পায়ার নির্মান শেষ হলেও অপর পাশের মাত্র একটি পায়ার নির্মান বাকী রয়েছে। সেই সাথে বাকী রয়েছে উপরের অর্ধেক নির্মাণ। ঠিকাদারদের সেতুর পাশে ফেলে রাখা নির্মান সামগ্রীও রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সড়াতৈল গ্রামের মাহমুদুল হাসান বাবলা ও শহিদুল ইসলাম ভুলু জানান, এ অঞ্চলের ১ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন ফুলজোড় খাল পারাপার হন। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেতুটি নির্মান কাজ শেষ করার জন্য এলজিইডি’র উল্লাপাড়া উপজেলা অফিসকে বার বার তাগাদা দিলেও তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। তারা এটির নির্মান কাজ দ্রæত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

এ ব্যাপারে এলজিইডি’র উল্লাপাড়া অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১ বছর ধরে উক্ত সেতু নির্মান কাজ বন্ধ রেখেছে। অফিস থেকে বার বার ঠিকাদারকে চিঠি দিলেও তাতে সাড়া না দেওয়ায় কয়েকদিন আগে চলতি মাসের ৩০ জুনের মধ্যে সেতুর অবশিষ্ট অংশের কাজ শুরু করার জন্য সময় সীমা বেধে দিয়ে শেষ বারের মত চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ঠিকাদার কাজ শুরু না করলে তার কার্যাদেশ বাতিল করে এখানে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হবে।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লিটন এন্টারপ্রাইজের মালিক মোরশেদুল ইসলাম লিটন জানান, তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার কাজ করতে গিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে সড়ক সেতুটির নির্মান কাজ শেষ করতে পারেননি। এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি সেতুর অবশিষ্ট কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে