‘বিএনপির মিথ্যাচারের রাজনীতি জনগণ প্রত্যাখান করেছে’

প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২২; সময়: ১১:১৮ অপরাহ্ণ |
‘বিএনপির মিথ্যাচারের রাজনীতি জনগণ প্রত্যাখান করেছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর পর বিকেল ৫টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গনে বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রাটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মো: ডাবলু সরকার।

সভাপতির বক্তব্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস হলো সংগ্রাম গাঁথা বিজয়ের ইতিহাস, যার মন্ত্রই হলো “জয় বাংলা”। আজকে জয় বাংলা নিয়ে যাদের গা জ্বালা করে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর নেতৃত্বে ৫৪এর নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয় বাংলা ধ্বনি দিয়েই বিজয় অর্জণ করেছিলো। বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা জনগণের সামনে পেশ করেছিলেন জয় বাংলার ধ্বনি দিয়েই, ৬৯এর গণঅভূত্থান ও ৭১এর মহান মুক্তিযুদ্ধ জয় বাংলা ধ্বনি দিয়েই পরিচালিত হয়েছিলো। জয় বাংলা ধ্বনি দিয়েই শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু উপাধী দেওয়া হয়েছিলো, জয় বাংলা দিয়েই আমরা একটি স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। আর বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

দলীয় নেতাকর্মী ও রাজশাহীবাসীকে আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে মোঃ ডাবলু সরকার কবি সৈয়দ শামসুল হক এর পংক্তি উদ্ধৃতি করে বলেন, “তেরশত নদী শুধায় আমাকে, কোথা থেকে তুমি এলে ? এসেছি বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে। আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে।”

ডাবলু সরকার বলেন, বাংলাদেশ বিনির্মাণে শ্রেষ্ঠ দুইটি কবিতা যিনি উপহার দিয়েছিলেন, তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কবিতা দুইটি হলো- এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের একটি বক্তব্যে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি দল না, প্রতিষ্ঠান না, আওয়ামী লীগ হলো একটি অনুভূতির নাম- যথার্থই বলেছিলেন প্রিয় নেতা সৈয়দ আশরাফ। আমরাও অনুভূতি নিয়েই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে এসেছি। আওয়ামী লীগের নেতাকমীদের অনুভূতি ছিলো বলেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েই একটি সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র স্বাধীন করেছিলাম। অনুভূতি ছিলো বলেই ৭৫ পরবর্তীতে মুজিব বিহীন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মানসকন্যা, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে লুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, অনুভূতি ছিলো বলেই সকল ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও মিথ্যার বেশাতিকে পরাভূত করে নিজস্ব অর্থায়নে করতে পেরেছি পদ্মা সেতু নির্মাণ দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে। আর অনুভূতি ধারণ করেই বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নত ও সমৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে। সমগ্র বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ আজ এক বিস্ময়ের নাম, উন্নয়নের রোল মডেল।

তিনি বলেন, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মীর হৃদয়ে যদি রক্তক্ষরণ হয়, সেই রক্তক্ষরণ আমাদের হৃদয়েও হয়। বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন তা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে। ১৯৪৯ সালের ঢাকার রোজ গার্ডেনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিলো। বিশাল বিশাল মহিরূহ এই দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও এই দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানি, শামসুল হক, আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ, জাতীয় নেতা শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, জোহরা তাজউদ্দিন, সাজেদা চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জিল্লুর রহমান, আমাদের উত্তরবঙ্গের নেতা আব্দুল জলিল, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আজকে আমাদের তাঁদের অনেকই নেই। আমি তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

তিনি উপস্থিত নারীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি জামায়াতের মহিলা কর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও সরকার এবং আওয়ামী লীগ সম্পর্কে আমাদের মা-বোনদের মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। আপনারা সাজগ থাকবেন। এদের ধরে উচিত শিক্ষা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিবেন। নির্বাচন সামনে এলেই জামায়াতিদের এই অপকর্ম শুরু হয়ে যায়। তারা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দিশেহারা হয়ে পড়ে, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়। কিন্তু বিভ্রান্তি কাজে আসবে না, বিএনপি-জামায়াতের এই মিথ্যা ও বানোয়াট অপপ্রচার জনগণ বিশ্বাস করে না। জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখান করেছে।

মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, বিশিষ্ট নারীনেত্রী শাহীন আকতার রেনী জামায়াত-বিএনপিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, খালেদা জিয়া, ফখরুল, তারেক জিয়া না হয় পদ্মা সেতুতে নাই বা ভ্রমন করলো কিন্তু বিএনপি’র নেতাকর্মীরা তো পদ্মা সেতুতে ভ্রমন করবে। যদি না করে তবে নৌকাতে চড়েই নদী পার হতে হবে। তাহলে নৌকা কি? জনগণের প্রতীক। আপনারা কি স্বীকার করে নিচ্ছেন নৌকা আপনাদেরও প্রতীক? আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত, বিতর্কের জন্য বিতর্ক না করে সত্যটা মেনে নেওয়া উচিত। আমাদের গর্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শত দূর্যোগের মধ্যেও বাংলার আপামর জনগণের খোঁজ খবর রাখেন। আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছে বলেই বাংলাদেশ আজ নিরাপদ। বাংলাদেশকে তিনি উন্নত, সমৃদ্ধ ও বিশ্ববাসীর কাছে আত্মমর্যাদার জাতি হিসেবে বাঙালি জাতিকে তুলে ধরেছেন। আগামী ১০০ বছর ডেল্টা প্ল্যান করে তিনি বাংলাদেশকে টেকসই উন্নত দেশে পরিনত করার প্রাণপন চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছেন।

আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, ডাঃ তবিবুর রহমান শেখ, যুগ্ম সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে।

আরও বক্তব্য রাখেন, নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালী খান, নগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল শেখ, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সালমা রেজা, নগর যুব মহিলা লীগ সভাপতি এ্যাড. ইসমত আরা, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম।

উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি রেজাউল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আসাদুজ্জামান আজাদ, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, কৃষি বিয়ষক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, ধর্ম সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ ফ ম আ জাহিদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, মহিলা সম্পাদিকা ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক ওমর শরীফ রাজিব, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার কামাল, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম, কোষাধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ ডলার।

সদস্য শাহাব উদ্দিন, নজরুল ইসলাম তোতা, আশরাফ উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আব্দুল মান্নান, আতিকুর রহমান কালু, হাফিজুর রহমান বাবু, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, বাদশা শেখ, জয়নাল আবেদীন চাঁদ, ইউনুস আলী, সৈয়দ মন্তাজ আহমেদ, আলিমুল হাসান সজল, মোখলেশুর রহমান কচি, মাসদু আহমেদ এ্যাড. রাশেদ-উন-নবী আহসান, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজপাড়া থানার সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইপফাৎ আরা কামাল, মালিহা জামান মালা, নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুন, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সাকের হোসেন বাবু, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা মিতু, নগর যুব মহিলা লীগ সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ, নগর তাঁতী লীগের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান আনার, সদস্য সচিব মোকসেদ-উল-আলম সুমন প্রমুখ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে