বোরোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আউশ চাষে কৃষক

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২; সময়: ৪:৪২ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
বোরোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আউশ চাষে কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : নওগাঁর মান্দায় বোরো ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আউশ ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকেরা। আষাঢ় মাসের শুরু থেকে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হওয়ায় হালচাষের উপযোগী পানি জমেছে মাঠের জমিগুলোতে। এ অবস্থায় ঘুরে দাঁড়ানোর আশা নিয়ে আউশ চাষে মাঠে নেমেছেন তাঁরা।

কৃষকেরা বলছেন, এবারে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বোরো ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছিল। এ কারণে কাটা-মাড়াই করতে স্বাভাবিকের চেয়ে খরচ হয়েছে দ্বিগুন। একই সঙ্গে ব্যাপক ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এতে করে কৃষকেরা চরম ক্ষতির মুখে আছেন। বর্গাচাষীদের অবস্থা আরও করুণ। এছাড়া ঘনঘন বৃষ্টির কারণে খড়ও নেওয়া সম্ভব হয়নি। সেগুলো গলে-পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারে মাঠ পর্যায়ে ব্রি-ধান ৫৬, ব্রি-ধান ৪৯ ও স্থানীয় জাতের ধান চাষ করছেন কৃষকেরা। আষাঢ় মাসের শুরুতেই পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষকেরা মাঠে নেমেছেন ধানচাষে।

আজ সোমবার উপজেলার নবগ্রাম, নলঘৈর, কোঁচড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে আউশ ধান চাষে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কেউবা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ আবার কেউ জমির আইল পরিষ্কার করছেন। অনেকে শ্রমিক দিয়ে বীজতলা থেকে চারা তুলছেন। আবার কেউ জমিতে রোপণ করছেন চারা।

উপজেলার উত্তর কোঁচড়া গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম সোনা বলেন, বোরো ধান কেটে নেওয়ার মুহুর্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হয়। এতে ধান গাছ মাটিতে পড়ে যায়। এ অবস্থায় কাটা-মাড়াই করতে খরচ হয়েছে দ্বিগুন। প্রতিবিঘায় ফলন হয়েছে ১৩-১৪ মণ করে। ফলন বিপর্যয় হওয়ায় অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।

এই কৃষক আরও বলেন, ‘বোরো ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে আউশ ধানচাষের প্রস্তুতি নিয়েছি। এ লক্ষ্যে ব্রি-ধান ৫৬ জাতের চারা তৈরি করেছি। দু’একদিনের মধ্যে জমিতে চারা রোপণ করা হবে।’

নলঘৈর গ্রামের কৃষক সেফাতুল্যা দেওয়ান বলেন, ‘এবারের বোরো ধানে যে পরিমাণ ফলন হয়েছে তাতে জমি লাগানো, পানি সেচ, কীটনাশক, কাটা-মাড়াইয়ে শ্রমিকের মজুরী দিয়ে অবশিষ্ট আর কিছুই নেই। তাই বাধ্য হয়েই পাঁচ বিঘা জমিতে আউশ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হলে সংসারে হয়তো কিছুটা ব্যালান্স হবে।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, বর্তমানে ধানের বাজার মূল্য বেশি। এছাড়া বৃষ্টি নির্ভর হওয়ায় আউশ চাষে সেচ খরচ কম। আউশ ধানের চাষ হলে ওইসব জমিতে আগাম সরিষার চাষ করে কৃষকেরা সময়মত বোরো ধানের চাষ করতে পারেন।

কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, রোপা আমনে স্বর্ণা জাতের ধান চাষ হলে দেরিতে সরিষার চাষ করতে হয়। এতে বিলম্বিত হয় বোরো ধানের চাষ। এসব কারণে আউশ ধানচাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকেরা।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে